প্রেরণা পাল। বিশ্ববাংলা মেলা প্রাঙ্গণে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
এই দুর্নীতি-ভরা রাজ্য আমার নয়— কবিতার পঙ্ক্তির শব্দবিন্যাসে কিছু অদলবদল এনে বলেছিলেন তিনি। এ বছরের উচ্চ মাধ্যমিকে চতুর্থ হওয়া প্রেরণা পালের সেই বক্তব্য প্রকাশের পরে কম ‘কুকথা’ বর্ষিত হয়নি তাঁর উদ্দেশে। তাঁকে রীতিমতো ‘ট্রোল’ করা হয়েছিল সমাজমাধ্যমে, যেখানে যোগ দিয়েছিলেন মূলত রাজ্যের শাসক দলের কর্মী-সমর্থকেরাই। সেই প্রেরণা বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে কৃতী ছাত্রীর পুরস্কার নিলেন এবং বললেন, “আমি কারও পক্ষে বা বিপক্ষে বলিনি। তাই আমি যেটা বলেছিলাম, তার সঙ্গে এই পুরস্কার নিতে আসার বিষয়টিকে এক করে দেখা ঠিক নয়।’’
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের সফলদের হাতে এ দিন পুরস্কার তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। সমাজমাধ্যমে এত কটাক্ষ-কুকথার পরে প্রেরণা সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হবেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন ও সংশয় জেগেছিল অনেকেরই। অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে এবং পুরস্কার নিয়ে প্রেরণা সেই জল্পনার অবসান ঘটিয়ে দিলেন।
রাজ্যব্যাপী দুর্নীতি নিয়ে প্রেরণার বক্তব্যের পরে তাঁর বাবা অশোক পালকেও নেটিজ়েনদের একাংশের আক্রমণের মুখে পড়তে হয়। প্রেরণা যে-স্কুলে পড়তেন, অশোক সেই গাইঘাটা ইছাপুর হাইস্কুলেরই প্রধান শিক্ষক। প্রেরণার মা-ও স্কুলশিক্ষিকা। প্রেরণার বাবা-মা কী ভাবে চাকরি পেলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছিল সমাজমাধ্যমে। এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রেরণার বাবাও। অশোক বলেন, ‘‘গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সাংবিধানিক সরকার এই সম্মান দিচ্ছে। এটা কারও কোনও ব্যক্তিগত বিষয় নয়। আর প্রেরণা এটা নিজের যোগ্যতায় অর্জন করে নিয়েছে। তাই সম্মান গ্রহণ করেছে।’’ আর ট্রোলিং প্রসঙ্গে প্রেরণার বক্তব্য, তাঁর মোবাইল নেই। তাই কী হয়েছে, সেটা তাঁর জানা নেই।