উলুবেড়িয়ার একটি বিপণি। ছবি: সুব্রত জানা।
সকাল থেকে প্রায় চার ঘণ্টা ঘুরে পছন্দসই জুতো কিনতে পেরে হাসি ফুটল বাগনানের বছর পাঁচেকের তিন্নির মুখে।
একবেলাতেই যে হারে বালুচরী আর ধনেখালির তাঁতের শাড়ি বিক্রি হল, তাতে খুশি চুঁচুড়ার বস্ত্র ব্যবসায়ী জয়ন্ত দাস।
ফুটপাথের দোকানিরা গলার স্বর চড়িয়ে দাম হেঁকেছেন। জামাকাপড় থেকে সাজের জিনিস সবই বিকিয়েছে রমরমিয়ে।
ঝলমলে আবহাওয়ায় পুজোর আগের শেষ রবিবারের বাজার জমে গেল। কী হাওড়া, কী হুগলি দুই জেলার সর্বত্রই দোকানে দোকানে গিজগিজে ভিড়। এমনকী, চপ-কাটলেটের দোকান থেকে ফুটপাথের গয়নার দোকান কোথাও সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তিল ধারণের জায়গা ছিল না। এক সপ্তাহ আগেই পুজো বাজারে বাদ সেধেছিল আবহাওয়া। তাই শেষ রবিবার আশ মিটিয়ে চলল কেনাকাটা।
শ্রীরামপুর হুগলি জেলার অন্যতম সেরা বাজার। এ দিন বেলা বাড়তেই স্টেশন লাগোয়া রাজেন্দ্র বাগ রোড, নেতাজি সুভাষ অ্যাভিনিউ, বি পি দে স্ট্রিটের মতো রাস্তায় গাড়ি চলাচল কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ে। গোটা চত্বর কেনাকাটা করতে বেরনো মানুষের দখলে চলে যায়। পোশাক বিক্রেতা শঙ্কর দেবনাথ বলেন, “এ বার শুরুতে কেনাকাটা কিছুটা কম ছিল। তবে শেষ কয়েক দিন ভালই ভিড় হয়েছে। সকাল থেকে কার্যত খাওয়ার সময় পাইনি।”
দুপুরে কাঠফাটা রোদ। তা সত্ত্বেও ভিড় থেমে থাকেনি। অনেকেই ঠান্ডা পানীয়ে গলা ভিজিয়েছেন। উত্তরপাড়া, ধনেখালি, মগরা, চন্দননগর সর্বত্রই ছবিটা একই রকম। খদ্দের সামলাতে হিমসিম দোকানিরা।
জেলা সদর চুঁচুড়ার খড়ুয়া বাজার থেকে শুরু করে ঘড়ির মোড়, আখনবাজারের বড় দোকানিরা তো বটেই, ফুটপাথের ছোট দোকানিরাও বিক্রিবাটায় খুশি। বিক্রেতাদের দাবি, এ দিনের মতো আবহাওয়া যদি কয়েক দিন আগেও থাকত, তা হলে বেচাকেনা আরও ভাল হত। ট্রেন যোগাযোগ হয়ে যাওয়ায় এ বার আরামবাগের বহু মানুষ এ দিন কেনাকাটা করতে চলে এসেছিলেন শ্রীরামপুরে ও কলকাতায়।
উলুবেড়িয়া, ডোমজুড়, আমতার মতো হাওড়ার গ্রামীণ এলাকার বাজারগুলিও ছিল ভিড়ে ঠাসা। মেয়েদের স্কার্ট, লেগিংস, জিন্স, আনারকলি চুড়িদার বিকিয়েছে রমরমিয়ে। রোদের কারণে এই সব বাজারে শুরুর দিকে ভিড় তুলনামূলক ভাবে কম থাকলেও বেলা যত গড়িয়েছে, পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ভিড়। বাগনানের পোশাক বিক্রেতা গৌতম বসু বলেন, “তরুণীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাহিদা জিন্স আর শর্ট টপের। শাড়ির মধ্যে ব্রাসো ও চান্দেরি নেট।”
আজ, পঞ্চমী। আজ থেকেই নতুন পোশাকে পথে নামবেন আট থেকে আশি।