ভাঙা ছাউনি, নোংরা শৌচালয়ে বেহাল ফেরিঘাট

রোদ-বৃষ্টিতে যাতে যাত্রীদের কষ্ট না হয় সে জন্য রয়েছে ছাউনি। রয়েছে যাত্রীদের জন্য শৌচালয়, পানীয় জলের জন্য নলকূপের ব্যবস্থা। তবে যাত্রীরা এসব পরিষেবা থেকে তেমন সুবিধা পান না। কারণ যাত্রীছাউনি থাকলেও তার মাথার ছাদের বেশিরভাগই উধাও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাউড়িয়া শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৪ ০১:২৫
Share:

বাউড়িয়া ফেরিঘাটের যাত্রী ছাউনির ছাদ উধাও।

রোদ-বৃষ্টিতে যাতে যাত্রীদের কষ্ট না হয় সে জন্য রয়েছে ছাউনি। রয়েছে যাত্রীদের জন্য শৌচালয়, পানীয় জলের জন্য নলকূপের ব্যবস্থা। তবে যাত্রীরা এসব পরিষেবা থেকে তেমন সুবিধা পান না। কারণ যাত্রীছাউনি থাকলেও তার মাথার ছাদের বেশিরভাগই উধাও। যাত্রীদের পরিবর্তে তা ভ্যানরিকশার স্ট্যান্ডে পরিণত হয়েছে। বেহাল শৌচালয়। নলকূপের জল পানের অযোগ্য। দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও হাওড়ার কয়েক হাজার যাত্রী নিত্য পারাপার করলেও উলুবেড়িয়ার বাউড়িয়া ফেরিঘাটের দীর্ঘদিন ধরে এমনই শোচনীয় হাল।

Advertisement

হাওড়ার এই শিল্পাঞ্চলের সঙ্গে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজ এলাকার ফেরি সার্ভিস চালু রয়েছে ২০ বছর ধরে। ১৯৯৪ সাল থেকে হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতি এই ফেরি সার্ভিসের দায়িত্ব নেয়। তার আগে এটি ছিল সুন্দরবন লঞ্চ সিন্ডিকেটের দায়িত্বে। কলকাতা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে বহু ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে বিভিন্ন পেশার মানুষজন এই পথে যাতায়াত করেন। একই ভাবে হাওড়া জেলা থেকেও যাতায়াত করেন বহু মানুষ। ঘাট কর্তৃপক্ষেরই দাবি, দৈনিক হাজার দশেক যাত্রী পারাপার করেন। কিন্তু এত যাত্রী পারাপার করলেও ঘাটের অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি, উল্টে দিনের পর দিন তা আরও খারাপ হয়েছে বলে অভিযোগ নিত্যযাত্রীদের। যাত্রী পরিষেবার ন্যূনতম ব্যবস্থাও বেহাল। রোদ-বৃষ্টির হাত থেকে রেহাই পেতে যাত্রীদের জন্য ছাউনি তৈরি করা হলেও ছাদের বেশিরভাগই ফাঁকা। তার উপর জায়গার বেশিরভাগ জুড়ে রয়েছে রিকশা স্ট্যান্ড। শৌচালয় থাকলেও সেটিতে ঢোকার উপায় নেই। কারণ দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় আর নোংরা-অপরিষ্কার হওয়ার জন্য তা ব্যবহারের অযোগ্য। ঘাটের অদূরে পানীয় জলের একটি নলকূপ থাকলেও তার জল পানের অযোগ্য বলে অভিযোগ যাত্রীদের। ফলে পানীয় জলের প্রয়োজন হলে রাস্তার পাশে দোকানই ভরসা যাত্রীদের।

হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁরা ফেরি সার্ভিসের দায়িত্বে থাকলেও বাউড়িয়া ফেরিঘাটের পরিকাঠামোর দেখভালের দায়িত্ব হাওড়া জেলা পরিষদের। এ জন্য জেলা পরিষদকে তাঁরা টাকাও দেয়। হাওড়া জেলা পরিষদের সহ-সভাপতি অজয় ভট্টচার্য বলেন, “ঘাটের বেহাল পরিকাঠামো নিয়ে কেউ কোনওদিন অভিযোগ করেনি। তবে খোঁজ নিয়ে দেখছি। প্রয়োজনে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Advertisement


বেহাল শৌচালয়।

বাউড়িয়া ফেরিঘাটটি উলুবেড়িয়া পুরসভার মধ্যে পড়ে। তাই ঘাটের বেহাল পরিকাঠামো নিয়ে পুরসভারও দায় রয়েছে বলে দাবি যাত্রীদের। তাঁদের অভিযোগ, বছরখানেক আগে পুরসভার তরফে ঘাটে শৌচালয় তৈরি ও পরিস্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা আর কাজে পরিণত হয়নি। নিত্য এই পথে যাতায়াত করেন এমনই এক স্কুলশিক্ষিকা অনামিকা চৌধুরী বলেন, “ঘাটে যাত্রী পরিষেবার হাল অত্যন্ত খারাপ। অথচ আমরা তো ভাড়া গুণেই যাতায়াত করি। আমাদের সুবিধা-অসুবিধার দিকে কেন নজর থাকবে না প্রশাসনের?’’

উলুবেড়িয়ার মহকুমা শাসক তথা পুরসভার বর্তমান প্রশাসক নিখিল নির্মল অবশ্য এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। এই অবস্থায় ঘাটের বেহাল পরিকাঠামোর কবে উন্নতি হবে তা নিয়ে সংশয়ে যাত্রীরা।

ছবি: সুব্রত জানা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement