বেঙ্গালুরুতে নিখোঁজ কিশোরকে উদ্ধার করে আনল পুলিশ

প্রায় দু’বছর পর বাবা-মাকে দেখে বৃহস্পতিবার আত্মহারা হয়ে পড়ে বছর সতেরোর কিশোর পবিত্র পরামাণিক ওরফে গোলক। ছেলেকে ফিরে পেয়ে পরামণিক দম্পতিও আনন্দে আটখানা। বলাগড়ের একতারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দ্বারপাড়ার বাসিন্দা মানিকবাবু ক্ষৌর কাজকর্ম করে কোনওরকমে সংসার চালান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:২৭
Share:

বাবা-মায়ের সঙ্গে পবিত্র।

প্রায় দু’বছর পর বাবা-মাকে দেখে বৃহস্পতিবার আত্মহারা হয়ে পড়ে বছর সতেরোর কিশোর পবিত্র পরামাণিক ওরফে গোলক। ছেলেকে ফিরে পেয়ে পরামণিক দম্পতিও আনন্দে আটখানা।

Advertisement

বলাগড়ের একতারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দ্বারপাড়ার বাসিন্দা মানিকবাবু ক্ষৌর কাজকর্ম করে কোনওরকমে সংসার চালান। অভাব মেটাতে দোকানে আসা খরিদ্দারদের কাছে ছেলের একটা কাজের জন্য বলতেন তিনি। পাড়ারই বাসিন্দা রাম পরামাণিক মানিকবাবুকে তাঁর ছেলেকে বেঙ্গালরুতে নিয়ে গিয়ে কাজে লাগিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। প্রস্তাবে রাজি হয়ে মানিকবাবু ছেলেকে রামের হাতে ছেড়ে দেন।

২০১৩ সালের ১৫ই মার্চ পবিত্রকে নিয়ে রাম বেঙ্গালুরুতে চলে যায়। সেখানে সে একটি সোনার দোকানে তাকে কাজে লাগিয়ে দেয়। কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যেই প্রচণ্ড খাটুনি আর দোকানদারের অত্যাচারের জেরে পবিত্র সেখানে কাজ ছেড়ে অন্য দোকানে চলে যায়। পাছে আগের দোকানের মালিক তার খোঁজ পায় তাই সে বাড়িতেও কিছু জানায়নি বলে এ দিন পবিত্র জানায়। এ দিকে প্রথম দিকে খোঁজখবর পেলেও পরে আর ছেলের কোনও খবর পাচ্ছিলেন না মানিকবাবু। ইতিমধ্যেই ওই সোনার দোকানের মালিক মানিকবাবুকে ফোন করে জানান, ১৩ জুন পবিত্র চলে গিয়েছে। তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এর দিন কয়েকের মধ্যেই একদিন রাম মানিকবাবুর বাড়িতে আসে। তাকে ছেলের কথা জিজ্ঞাসা করেন তিনি। কিন্তু রাম কোনও খবর না দিয়ে উল্টে এ সব নিয়ে থানা-পুলিশ করলে তাঁকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় বলে মানিকবাবুর অভিযোগ। ভয় পেয়ে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন।

Advertisement

আদালতের নির্দেশে বলাগড় থানায় ছেলের নিখোঁজ সংক্রান্ত অভিযোগ দায়ের করেন মানিকবাবু। এর পরে বেঙ্গালুরুতে গিয়ে তিনি সোনার দোকানের মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু সেখানেও তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়। নিরুপায় হয়ে বলাগড়ে ফিরে আসেন তিনি। কোথাও ছেলের খোঁজ না পেয়ে দিশাহারা পরামাণিক দম্পতিকে অবশ্য নাগাড়ে সোনার দোকানের মালিক ও রাম হুমকি দিতে থাকে বলে অভিযোগ। বাধ্য হয়ে শেষপর্যন্ত ২৫ নভেম্বর মানিকবাবু বলাগড় থানায় সমস্ত ঘটনা জানান। এর পর পবিত্রর খোঁজে মানিকবাবুকে সঙ্গে নিয়ে বলাগড় থানার অফিসার আশিস রায়ের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল বেঙ্গালুরু রওনা হয় ২২ জানুয়ারি। সেখানে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালানোর পরে কটনপেট থানার অর্ন্তগত ওটিসি রোডে একটি চায়ের দোকানে পবিত্রর খোঁজ মেলে। এর পর স্থানীয় থানার সহযোগিতায় ওই চায়ের দোকান থেকে পবিত্রকে উদ্ধার করে বৃহস্পতিবার সকালে বলাগড়ে পৌঁছয় পুলিশ।

এ দিনই পবিত্রকে চুঁচুড়া আদালতে তোলা হলে বিচারকের নির্দেশে তাকে বাবা মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। রাম পলাতক। তার খোঁজে তল্লাশি চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement