ফের হাওড়ায় সিপিএম পরিচালিত দু’টি পঞ্চায়েতে অনাস্থা আনল তৃণমূল। দু’টি ক্ষেত্রেই প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বজনপোষণ, স্বেচ্ছাচারিতা এবং এলাকায় যথাযথ উন্নয়ন করতে না পারার অভিযোগ তুলেছে তারা। দু’টি পঞ্চায়েতের মধ্যে একটি হল দক্ষিণ সাঁকরাইল, অন্যটি শ্যামপুরের কমলপুর।
সিপিএমের অভিযোগ, বিভিন্ন পঞ্চায়েতে তাদের দলীয় সদস্যদের ভয় বা প্রলোভন দেখিয়ে প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থার পক্ষে সই করতে বাধ্য করছে তৃণমূল। তৃণমূল অভিযোগ মানেনি।
দিন কয়েক আগেই ডোমজুড়ের মাকড়দহ-১ পঞ্চায়েতের দলীয় প্রধানকে সরাতে সিপিএম সদস্যেরা তৃণমূূলের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন। দক্ষিণ সাঁকরাইল পঞ্চায়েতেও প্রায় একই ছবি। ওই পঞ্চায়েতের ২০টি আসনের মধ্যে সিপিএমের দখলে রয়েছে ১০টি, ফরওয়ার্ড ব্লকের ২টি, বিজেপির ১টি, কংগ্রেসের ৩টি এবং তৃণমূলের ৪টি। গত ১৪ অক্টোবর প্রধানের বিরুদ্ধে তৃণমূলের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে কংগ্রেস সদস্যেরা ছাড়াও দুই সিপিএম সদস্য এবং এক ফরওয়ার্ড ব্লক সদস্য সই করেছেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। এই অনাস্থার উপরে ভোটাভুটি হওয়ার কথা আগামী ২৭ অক্টোবর। তাঁরর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি প্রধান রাবেয়া মল্লিক।
কমলপুর পঞ্চায়েতে মোট আসন ১৯। তার মধ্যে সিপিএমের দখলে রয়েছে ১০টি, তৃণমূলের ৯টি। গত ২০ অক্টোবর এখানে অনাস্থা আনে তৃণমূল। আগামী ৩১ অক্টোবর ভোটাভুটির দিন স্থির হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। প্রধান চৈতালি বেরার দাবি, “আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।”
এ ভাবে অনাস্থা এনে জেলায় তাদের দখলে থাকা একের পর এক পঞ্চায়েত তৃণমূল কব্জা করতে চাইছে বলে অভিযোগ সিপিএমের। দলের জেলা সম্পাদক বিপ্লব মজুমদারের দাবি, “জেলা জুড়ে সর্বত্রই তৃণমূল সন্ত্রাস চালাচ্ছে। আমাদের পঞ্চায়েত সদস্যদের হুমকি দিচ্ছে। ফলে, আমাদের সদস্যেরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। এই অবস্থায় পঞ্চায়েত চালাতেও সমস্যা হচ্ছে।”
পক্ষান্তরে, সিপিএমের এই দাবি উড়িয়ে তৃণমূলের জেলা (শহর) সভাপতি তথা কৃষি বিপণনমন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, “ভয় দেখানোর ব্যাপার নেই। সিপিএম গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলে ওই সব এলাকায় উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে। উন্নয়নের স্বার্থেই অনাস্থা আনা হয়েছে।”