হুগলি মোড়ের কাছে এই জমিতেই গড়ে উঠবে বাসস্ট্যান্ড। ছবি: তাপস ঘোষ।
স্ট্যান্ডে জায়গার অভাব। অগত্যা সারি সারি বাস দাঁড়িয়ে থাকে রাস্তার উপর। আর তার ফল ভুগতে হচ্ছে শহরবাসীকে। হুগলির জেলা সদর চুঁচুড়ায় শহরের কেন্দ্রস্থলে এই বাসস্ট্যান্ড মানুষের সুবিধার বদলে সমস্যাই বাড়িয়েছে বেশি।
২০০৮ সালে বাসস্ট্যান্ডটি তৈরি হয়। সারাদিনে শ’দুয়েক বাস চলাচল করে। প্রচুর যাত্রীর আনাগোনা লেগেই থাকে। রাস্তার উপর এমনভাবে সারি সারি বাস দাঁড়িয়ে থাকে যে অফিস টাইমে যাত্রীদের প্রায় প্রত্যেকদিনই যানজট সমস্যায় ভুগতে হয়। যানজটের কারণে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের মাঝে মাঝে স্কুলে পৌঁছতে দেরি হয়ে যায় বলে অভিযোগ। তা ছাড়া এই রাস্তার পাশেই রয়েছে হাসপাতাল, জেলা পরিষদ, জেলা পুলিশের সদর দফতর, জেলা আদালত। ফলে বহু মানুষের সারাদিনের আসা যাওয়া চলে এই পথ দিয়েই। যানজটের জন্য মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনাও ঘটে। সমস্যার সমাধানে এলাকার মানুষ বহুবার জেলা প্রশাসন থেকে শুরু করে পুরসভা সর্বত্রই অভিযোগ জানিয়েছে। প্রশাসন থেকে যানজট সমস্যার সমাধানে ট্রাফিক পুলিশের ব্যবস্থা করা হলেও তাতে বিশেষ লাভ হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
জেলা প্রশাসনের তরফে অবশ্য কয়েক বার বাসস্ট্যান্ডটিকে শহরের কেন্দ্রস্থল থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চিন্তা-ভাবনা করা হয়েছিল। সেইমত বাসস্ট্যান্ড তৈরির পরিকল্পনাও শুরু হয়ে যায়। কিন্তু রাজ্য পরিবহণ দফতরের অনুমোদনের অপেক্ষায় আটকে ছিল সেই পরিকল্পনা। শেষ পর্যন্ত রাজ্য পরিবহণ দফতর ৫৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে প্রকল্প রূপায়ণের জন্য। হুগলি মোড়ের জীবন পালের বাগান এলাকায় এক একর জমিতে এই বাসস্ট্যান্ডটি তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। ওই বাসস্ট্যান্ডে শুধু যে বাস দাঁড়াবে তা নয়, থাকবে যাত্রীনিবাস, শপিং মল, খাওয়ার দোকান, শৌচাগার সমস্ত কিছু। এই বাসস্ট্যান্ড তৈরি হলে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের বাস যোগাযোগ আরও সুদৃঢ় হবে।
স্থানীয় বিধায়ক তপন মজুমদার বলেন, “বর্তমানে যেখানে বাসগুলি দাঁড়ায়, অল্প জায়গার কারণে সমস্যা হচ্ছে। যার ফলে এখন পরিকল্পিতভাবে সেন্ট্রাল বাস টার্মিনাস তৈরি করা হচ্ছে।” চুঁচুড়ার পুরপ্রধান গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, “বর্তমান ব্যসস্ট্যান্ডে এক সঙ্গে সব বাস দাঁড়াতে পারে না। তাই রাস্তার উপর দাঁড়াতে হয়। এতে যানজট বাড়ছে। দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন মানুষ। নতুন বাসস্ট্যান্ড তৈরি হলে এ সব সমস্যার সমাধান হবে।”
হুগলির জেলাশাসক মনমীত নন্দা বলেন, “নতুন বাসস্ট্যান্ড তৈরি হলে যাত্রীদের সুবিধা হবে। ইতিমধ্যেই প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।”