বাড়ির লোকজনের সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না। তাই আলাদা থাকার পরিকল্পনা করে গৌরব মণ্ডল ওরফে শানু। সে জন্য যেন-তেন-প্রকারেণ অল্প সময়ে অনেক টাকা জোগাড় করতে চেয়েছিল সে। শাগরেদ জুটিয়ে তাই সে অপহরণ করে বলাগড়ের গোপালপুরের ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া অন্বেষা মণ্ডলকে। কিন্তু চেঁচামেচি করায় মেয়েটিকে খুন করে তারা। খুনের অভিযোগে ধৃত তিন জনকে জেরার পরে এ দাবি পুলিশের।
ঘটনার পর থেকেই দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি চেয়ে সরব গ্রামবাসী। বুধবারও গ্রামে মৌন মিছিল হয়। সামিল হন স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, এমনকী বাসিন্দারাও। অন্বেষার বাবা চিন্ময় মণ্ডল বলেন, “অপরাধীদের কঠিনতম সাজা হোক। ওদের পিছনে আরও কেউ থাকলে তাদেরও শাস্তি দেওয়া হোক।”
১২ ডিসেম্বর বিকেলে সাইকেলে চেপে গৃহশিক্ষিকার কাছে পড়তে যায় অন্বেষা। পুলিশ সূত্রে দাবি, রাত সওয়া ৮টা নাগাদ বাড়ি ফেরার পথে তাকে অপহরণ করে শানু এবং তার দুই বন্ধু কৌশিক মালিক ও স্বরূপ মজুমদার। স্বরূপ জিরাটেরই একটি স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। অপহরণের পরে তারা ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে মেয়ের বাড়ির লোকজনের কাছে। তার আগেই অবশ্য তাকে তারা খুন করে ফেলে। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে শনিবার গভীর রাতে তিন জনকেই গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের জেরা করে গঙ্গার চর খুড়ে উদ্ধার হয় অন্বেষার দেহ।
জেরায় ধৃতেরা জানায়, ভয় পেয়ে অন্বেষা চিত্কার শুরু করলে লোক জানাজানির ভয়ে তারা অন্বেষাকে খুন করে। তদন্তকারীরা জানান, শানু সচ্ছ্বল পরিবারের ছেলে। তাদের জমিজমা আছে। ইদানীং সে বদসঙ্গে পড়েছিল। পরিবারের লোকের সঙ্গে মনোমালিন্য হলে সে আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। তার জেরেই অপহরণ করে মুক্তিপণ চাওয়ার ভাবনা। এ ব্যাপারে সে স্বরূপ এবং ইটভাটার কর্মী কৌশিককে পাশে পেয়ে যায়। পুলিশের দাবি, খুনের পরে দেহ লোপাট করতে অভিযুক্তরাই কোদাল ও চটের বস্তা জোগাড় করে।