পাত্রীর বয়স ১৪। পাত্র ১৯।
পাত্রী সপ্তম শ্রেণির। পাত্র রাজমিস্ত্রির কাজ করেন।
মাস খানেক আগে দু’জনের ঘনিষ্ঠতা। বৃহস্পতিবার গোটা রাজ্য জুড়ে প্রশাসনের উদ্যোগে যখন ‘কন্যাশ্রী দিবস’ পালিত হচ্ছিল, তখন মগরার কৃষ্ণদাস পল্লির ওই নাবালিকা বসতে যাচ্ছিল বিয়ের পিঁড়িতে। সকাল থেকে শুরু হয়ে যায় আচার-অনুষ্ঠান। শেষ পর্যন্ত পুলিশ প্রশাসনের তৎপরতায় বন্ধ হয় ওই নাবালিকার বিয়ে। তার বাবা মেনে নিয়েছেন, উপযুক্ত বয়স না হওয়া পর্যন্ত মেয়ের বিয়ে দেবেন না। কন্যাশ্রী দিবসে এমন সফলতায় স্বভাবতই খুশিপ্রশাসনের কর্তারা।
চুঁচুড়া সদরের মহকুমাশাসক সুদীপ সরকার বলেন,“রাজ্য জুড়ে যখন কন্যাশ্রী দিবস পালিত হচ্ছে, তখন ওই নাবালিকার বিয়ের খবর পেয়ে আমরা ছুটে যাই। ব্যাপারটি অন্যায় এ কথা ওই পরিবারকে বোঝাতেই ওরা বিয়ে বন্ধ রাখতে রাজি হয়ে যান।”
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই নাবালিকার বাবা পেশায় চা-বিক্রেতা। অভাবের সংসার। মেয়ের প্রেমের কথা জানতে পারার পরে তাই আর দেরি করেননি। পাত্র সুকান্তনগরের বাসিন্দা. তাঁর পরিবারের সঙ্গে দ্রুত কথাবার্তা সেরে ফেলেন। পাত্রীর বাড়ির বারান্দায় গড়ে তোলা হয় বিয়ের সুসজ্জিত মণ্ডপ। সকাল থেকেই আনন্দে মেতে ওঠেন আত্মীয়-পরিজন-সহ স্থানীয় বাসিন্দারা। মুরগির মাংস থেকে মিষ্টি আয়োজনের কোনও খামতি ছিল না।
সে খবর পেয়ে ওই বাড়িতে যান মহকুমাশাসক (চুঁচুড়া সদর) সুদীপ সরকার, চুঁচুড়া-মগরা ব্লকের বিডিও মৈত্রেয়ী গোস্বামী, চুঁচুড়া-মগরা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দেবব্রত বিশ্বাস প্রমুখ। মগরা থানার ওসি সুখময় চক্রবর্তীর নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনীও যায়। বিয়ের দিনে পুলিশ-প্রশাসনের আগমন দেখে ঘাবড়ে যান বিয়েবাড়ির লোকজন। ডেকে পাঠানো হয় পাত্র ও তাঁর বাড়ির লোকজনকেও। দু’পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসেন প্রশাসনের আধিকারিকরা। বোঝানো হয়, অল্প বয়সে বিয়ে দেওয়ার কুফল কী। অবশেষে বিয়ে বন্ধ রাখতে রাজি হন ওই নাবালিকার বাবা। প্রশাসনের কর্তারা মেয়েটির পড়াশোনার জন্য কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধা দেওয়ারও আশ্বাস দেন।
নাবালিকার বাবা বলেন, “অনেক চেয়েচিন্তে বিয়ের আয়োজন করেছিলাম। অল্প বয়সে মেয়ের বিয়ে দেওয়া যে অপরাধ তখন কেউই আমাকে জানায়নি। তা হলে এত খরচ করে বিয়ের আয়োজন করতাম না।” তবে তিনি স্বীকার করেছেন, “মেয়ের উপযুক্ত বয়স না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেওয়ার কথা ভাবব না।”
পাত্রপক্ষ অবশ্য জানিয়ে গিয়েছে, তাঁরা অপেক্ষায় থাকবে।
জাতীয় পতাকা কিনতে গিয়ে মৃত্যু
নিজস্ব সংবাদদাতা • শ্যামপুর
জাতীয় পতাকা কিনতে গিয়ে গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার হাওড়ার শ্যামপুরের নাউলে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম সইদুল আলি খান (৩৭)। বাড়ি শশাটির সমোসপুরে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন সইদুল এক বন্ধুকে নিয়ে সাইকেলে জাতীয় পতাকা কিনতে যাচ্ছিলেন। সেই সময় পিছন থেকে একটি গাড়ি তাঁদের ধাক্কা মারলে সাইকেল থেকে দু’জনেই ছিটকে পড়েন। স্থানীয় বাসিন্দারা রক্তাক্ত অবস্থায় দু’জনকে পটলডাঙা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা সইদুলকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। আহত বন্ধুকে উলুবেড়িয়া হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। অন্যদিকে, এ দিনই লরির ধাক্কায় বাঁকুড়ার কোতুলপুরে মৃত্যু হয় এক সাইকেল আরোহীর। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত যুবকের নাম শুভজিৎ মোদক (২৪)। বাড়ি ওই এলাকার কুলডাঙা গ্রামে। তিনি আরামবাগের একটি সংবাদপত্রে কাজ করতেন। এদিন সাইকেলে অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে একটি লরি তাঁকে ধাক্কা মারে। ছিটকে পড়ে গুরুতর জখম হন তিনি। স্থানীয় লোকজন তাঁকে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করে। কিছুক্ষণ পরে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশ দেহটি ময়াতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।