দাবিদাওয়া নিয়ে শ্রমিকদের আন্দোলন চলছিলই। তার জেরে শ্রমিকদের অসহযোগিতাকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে শনিবার সকালে ডানকুনির মোল্লাবেড় এলাকার একটি বর্ষাতি তৈরির কারখানায় ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’-এর বিজ্ঞপ্তি ঝোলালেন কর্তৃপক্ষ। ফলে স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে কারখানার প্রায় ৭০ জন শ্রমিক বিপাকে পড়লেন। অসহযোগিতার অভিযোগ তাঁরা মানেননি।
কারখানার ভাইস-প্রেসিডেন্ট অতনু সেন বলেন, “এখন আমাদের পণ্যের চাহিদা নেই। শ্রমিকদের দাবিমতো টাকা দিতে আমরা অপারগ। দু’মাস ধরে শ্রমিকেরা ঠিকমতো কাজ করছিলেন না। শুক্রবার কাজই হয়নি। বাধ্য হয়েই ওই সিদ্ধান্ত।” শ্রীরামপুরের ডেপুটি শ্রম কমিশনার অমল মজুমদার বলেন, “ওই কারখানার শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া নিয়ে সরকারি স্তরে আলোচনা চলছিলই। কারখানার পরিস্থিতি যাতে দ্রুত স্বাভাবিক হয়, সে ব্যাপারে আমরা পদক্ষেপ করব।”
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কারখানায় স্থায়ী শ্রমিকের সংখ্যা ৩৯। প্রতি তিন বছর অন্তর তাঁদের সঙ্গে কারখানা কর্তৃপক্ষের চুক্তি হয়। গত জুন মাসে সেই চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়। নতুন ভাবে চুক্তির সময়ে স্থায়ী শ্রমিকেরা তাঁদের মজুরি ৩৪০০ টাকা করে বাড়ানোর দাবি তোলেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ ১৬০০ টাকার বেশি বাড়াতে রাজি হননি। প্রতিবাদে স্থায়ী শ্রমিকেরাই আইএনটিটিইউসি-র নেতৃত্বে আন্দোলনে নামেন। প্রশাসনের উদ্যোগে বার কয়েক ত্রিপাক্ষিক বৈঠকেও সমস্যা মেটেনি। বৃহস্পতিবার শেষ বারের আলোচনাতেও কোনও দিশা মেলেনি। এর পরে শনিবার সকালে কারখানার গেটে ওই বিজ্ঞপ্তি।
জেলা আইএনটিটিইউসি নেতা অন্বয় চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, “গোটা পরিস্থিতির দায় কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের উপরে চাপাতে চাইছেন। এটা ঠিক নয়। কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন।” শ্রমিকদের মধ্যে শেখ মইরুদ্দিন বলেন, “যে টাকা পাই, তাতে সংসার চলে না। তাই চার মাস ধরে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে মজুরি বৃদ্ধির আবেদন জানাচ্ছিলাম। কিন্তু কর্তৃপক্ষ একতরফা ভাবে কারখানা বন্ধ করে দিলেন।”