ভুয়ো রেশন কার্ড অভিযান

আরামবাগের দু’টি পঞ্চায়েতেই মিলল সাতশো

ভুয়ো রেশন কার্ড উদ্ধারে অভিযান শুরু করল আরামবাগ মহকুমা খাদ্য সরবরাহ দফতর। মহকুমার ৬৩টি পঞ্চায়েতের মধ্যে কেবল দু’টি পঞ্চায়েত এলাকা থেকেই গত শনিবার প্রথম দিনের অভিযানে প্রায় ৭০০ ভুয়ো রেশন কার্ড চিহ্নিত করা হয়েছে। আরামবাগ মহকুমা খাদ্য নিয়ামক প্রশান্ত দে বলেন, “চিহ্নিত হওয়া ভুয়ো রেশন কার্ড বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ভুয়ো রেশন কার্ড বাছাই নিয়ে যে জটিলতা ছিল তা কেটে গিয়েছে।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আরামবাগ শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:০০
Share:

ভুয়ো রেশন কার্ড উদ্ধারে অভিযান শুরু করল আরামবাগ মহকুমা খাদ্য সরবরাহ দফতর।

Advertisement

মহকুমার ৬৩টি পঞ্চায়েতের মধ্যে কেবল দু’টি পঞ্চায়েত এলাকা থেকেই গত শনিবার প্রথম দিনের অভিযানে প্রায় ৭০০ ভুয়ো রেশন কার্ড চিহ্নিত করা হয়েছে। আরামবাগ মহকুমা খাদ্য নিয়ামক প্রশান্ত দে বলেন, “চিহ্নিত হওয়া ভুয়ো রেশন কার্ড বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ভুয়ো রেশন কার্ড বাছাই নিয়ে যে জটিলতা ছিল তা কেটে গিয়েছে।”

মহকুমা খাদ্য সরবরাহ দফতর সূত্রে খবর, মহকুমার ৬টি ব্লক এলাকায় মোট ভুয়ো রেশন কার্ডের সংখ্যা ১ লক্ষ ৪৭ হাজারের উপর। কয়েক দফায় বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগী হয়েও ২০১১ সালে খোঁজ পাওয়া লক্ষাধিক ওই ভুযো রেশন কার্ডের একটিও উদ্ধার করা যাচ্ছিল না এতদিন। একে কর্মীর অভাব, তার উপর ছিল পঞ্চায়েতগুলোর অসহযোগিতা। যেমন জন্মের পর রেশন কার্ডের জন্য তদবির করা হয়, অথচ মৃত্যুর পর তা জানিয়ে কার্ড বাতিলের সুপারিশ আসে না। একইভাবে বিয়ের পর নতুন বধূর রেশন কার্ডের জন্য যেমন তদবির হয়, তেমনি মেয়েদের বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর আবার তাঁদের বাপের বাড়ির তরফে সেই খবর মেলে না। এই জটিলতা কাটাতে দিন পনেরো আগে সমস্ত পঞ্চায়েত সমিতি ও পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ এবং পুরপ্রতিনিধিদের নিয়ে বিশেষ বৈঠক করেন মহকুমা শাসক প্রতুলকুমার বসু। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়, ভুয়ো রেশন কার্ড বাতিলের ক্ষেত্রে পঞ্চায়েতগুলি সর্বতভাবে সাহায্য করবে।

Advertisement

২০১১ সালের গোড়ায় রাজ্যজুড়ে ভুয়ো রেশন কার্ড তল্লাশি অভিযান শুরু হয়। ওই বছর মার্চ মাস নাগাদ আরামবাগ মহকুমা খাদ্য সরবরাহ দফতর সন্ধান পায় মহকুমার ৬টি ব্লক আরামবাগ, গোঘাটের ২টি ব্লক, খানাকুলের ২টি ব্লক এবং পুড়শুড়ায় রেশন কার্ডের সংখ্যা ১৩ লক্ষ ৩২ হাজার ২২৬টি। আবার ওই সময়েই ব্লক পর্যায়ের জনগণনায় দেখা যায় মহকুমার মোট জনসংখ্যা ১১ লক্ষ ৮৫ হাজার। ২০১৪সালে জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে রেশন কার্ডের সংখ্যা প্রায় ১৪ লক্ষ ছাড়িয়েছে। যদিও আগের বাড়তি ১ লক্ষ ৪৭ হাজারের বেশি ভুয়ো রেশন কার্ড থেকেই গিয়েছিল

মহকমা শাসক বলেন, “এখন থেকে পঞ্চায়েত ধরে ধরে ভুয়ো রেশন কার্ড চিহ্নিতকরণের কাজ চলতে থাকবে। শনিবার অভিযানের প্রথম দিন আরামবাগ ব্লকের গৌরহাটি ২ পঞ্চায়েত এবং সালেপুর ২ পঞ্চায়েত এলাকায় ভুয়ো রেশন কার্ডের সন্ধানে চিরুনি তল্লাশি চালানো হয়। সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দু’টি পঞ্চায়েতের প্রতিটি সংসদে খাদ্য সরবরাহ দফতরের অফিসার-সহ কর্মীরা এবং পঞ্চায়েতের সদস্যরা হাজির থেকে সংশ্লিষ্ট রেশন ডিলারদের নিয়ে নথিভুক্ত উপভোক্তাদের তালিকা ধরে ধরে নাম ডেকে তা মিলিয়ে নেন। দুটি পঞ্চায়েত এলাকাতেই ৪ জন করে মোট ৮জন ডিলার রয়েছেন। গৌরহাটি ২ পঞ্চায়েত এলাকার এক রেশন ডিলার সুকুমার নন্দী বলেন, “জনে জনে নাম ডেকে নিঁখুত বাছাই পর্ব চলেছে।”

পঞ্চায়েতের লোকজন ছাড়াও পাড়ার বিশিষ্ট ব্যক্তিদের ডাকা হয়েছিল এই কাজে। ডিলার পিছু গড়ে ৮০ থেকে ১০০টি ভুয়ো কার্ড চিহ্নিত করা হয়েছে। চিহ্নিত ভুয়ো রেশন কার্ডগুলির ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে অধিকাংশই মৃতের এবং বিবাহিত মেয়ের নাম বাদ না যাওয়ার বিষয়। কোনও ক্ষেত্রেই তা পঞ্চায়েতকে জানানো হয়নি।

ভুয়ো রেশন কার্ড বাতিলের এই উদ্যোগ নিয়ে মহকুমা রেশন ডিলার সংগঠনের সম্পাদক দিলীপ সরকার বলেনস “আমরাও এই অভিযান চেয়েছিলাম। ভুয়ো রেশন কার্ডের বরাদ্দ উপভোক্তারাই ভোগ করছিলেন। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ উঠছিল।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement