সরব: অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে থানায় বিক্ষোভ। ইনসেটে মৃত মনতাজুল। —নিজস্ব চিত্র
মদের ঠেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে এক যুবককে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রবিবার রাতে খুনের ঘটনাটি ঘটেছে উলুবেড়িয়া বোয়ালিয়ার আমতলা হাসপাতাল মোড়ে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম শেখ মনতাজুল রহমান (৩০)। তাঁর বাড়ি উলুবেড়িয়ার চক সমরুক গ্রামে। মৃত যুবকের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ প্রশান্ত মান্না ও প্রদ্যুৎ ঘোষ নামে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। সোমবার তাদের উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ মোটরবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোন মনতাজুল। রাস্তায় বন্ধু শেখ মেহবুবের সঙ্গে দেখা হয় তাঁর। তাঁকে বাইকে চাপিয়ে বোয়ালিয়া বাজারের দিকে যান তিনি। মেহবুব জানান, এরপর ফোনে কয়েকজন বন্ধু মনতাজুলকে হাসপাতাল মোড়ে মদের আসরে ডাকে। সাড়ে আটটা নাগাদ মেহবুবকে নিয়েই মদের আসরে যান মনতাজুল। সেখানে আচমকা কয়েক জন যুবক তাঁকে মারধর শুরু করে বলে অভিযোগ। ভয়ে সেখান থেকে পালান মেহবুব। কিন্তু মনতাজুলকে ওরা আটকে রেখে দেয়। মনতাজুলের মা মর্জিনা বেগম বলেন, ‘‘রবিবার ছেলে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর রাতে জানতে পারি সে হাসপাতালে ভর্তি। হাসপাতালে গিয়ে শুনি, তাকে খুন করা হয়েছে।’’
মনতাজুল খুন হয়েছে এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকার কিছু মানুষ বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। মৃতদেহ আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। পরে পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পুলিশ দোষীদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ থামে। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিশ। এরপর রাতেই বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনায় মোট আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল মৃতের পরিবার। সোমবার ময়না তদন্তের পর দেহ ফিরলে বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে ফের উলুবেড়িয়া স্টেশন মোড়ে অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অভিযোগ, অবরোধকারীরা দু’টি বাস ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ বাকি অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশ সুপার সৌম্য রায় জানান, দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে। পুলিশ সূত্রের খবর, মৃত মনতাজুলের বিরুদ্ধেও একাধিক অপরাধমূলক কাজের অভিযোগ ছিল। এলাকায় বেআইনি বালি খাদানের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগও রয়েছে।