ওয়ালশে মৃত্যু যুবকের, কারণ নিয়ে বিতর্ক

হাসপাতাল থেকে দেওয়া মৃত্যুর শংসাপত্র দেখে এ দিন নওলেশের বাড়ির লোকেরা প্রশ্ন তোলেন, কেন মৃত্যুর কারণ হিসেবে ‘ডেঙ্গি’ উল্লেখ করা হল না? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, ডেঙ্গি নয়, এনসেফ্যালাইটিসেই নওলেশ মারা গিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৯ ০২:০৮
Share:

কারণ: নওলেশের মৃত্যুর শংসাপত্র। নিজস্ব চিত্র

জ্বরের উপসর্গ নিয়ে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এক যুবক। মঙ্গলবার সকালে তাঁর মৃত্যুতে উত্তেজনা ছড়াল হাসপাতালে। কারণ, মৃত্যুর শংসাপত্রে ‘অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস’ লেখা হলেও পরিবারের দাবি, ওই যুবকের ডেঙ্গি হয়েছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য হাসপাতালে পুলিশ যায়।

Advertisement

পুজোর সময় থেকেই শ্রীরামপুর এবং লাগোয়া রিষড়া শহরে জ্বরের প্রকোপ দেখা দেয়। দিন কয়েক আগে রিষড়ার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রভাসনগর শ্রীকৃষ্ণনগরের বাসিন্দা নওলেশ কুমার (২১) নামে ওই যুবক জ্বরে আক্রান্ত হন। তাঁর পরিবারের দাবি, শহরের এক চিকিৎসকের কাছে তাঁকে দেখানো হয়। গত শুক্রবার রক্ত পরীক্ষায় দেখা যায় তাঁর ‘ডেঙ্গি পজিটিভ’। অবস্থার অবনতি হলে সোমবার বিকেলে তাঁকে ওয়ালশে ভর্তি করানো হয়।

হাসপাতাল থেকে দেওয়া মৃত্যুর শংসাপত্র দেখে এ দিন নওলেশের বাড়ির লোকেরা প্রশ্ন তোলেন, কেন মৃত্যুর কারণ হিসেবে ‘ডেঙ্গি’ উল্লেখ করা হল না? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, ডেঙ্গি নয়, এনসেফ্যালাইটিসেই নওলেশ মারা গিয়েছেন। কিন্তু সে কথা যুবকের বাড়ির লোকজন মানতে চাননি। তাঁরা অভিযোগ তোলেন, তথ্য গোপন করতেই মৃত্যুর শংসাপত্রে অন্য কারণ লেখা হচ্ছে। যতক্ষণ ‘ডেঙ্গি’ উল্লেখ করা না হচ্ছে, ততক্ষণ মৃতদেহ নেবেন না বলেও তাঁরা জানিয়ে দেন। পুলিশ আসার পরে অবশ্য দেহ নিয়েই হাসপাতাল ছাড়েন মৃতের পিরজনরা। নওলেশের বাবা দেবনাথ প্রসাদ বলেন, ‘‘ছেলের ডেঙ্গি হয়েছিল। হাসপাতালেও সেটাই বলা হয়েছিল। কিন্তু মারা যাওয়ার পরে অন্য কথা বলা হল। যা রোগ ছিল, সেটা কেন লেখা হবে না?’’

Advertisement

ওয়ালশের সুপারিন্টেন্ডেন্ট কমলকিশোর সিংহের দাবি, ‘‘ওই যুবক অ্যাকিউট এনকেফেলাইটিসেই মারা গিয়েছেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ওঁকে পরীক্ষা করেই বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হন।’’ হাসপাতালের এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘ডেঙ্গিতে শক সিনড্রোম বা রক্তপাতের জন্য মৃত্যু হতে পারে। ওই যুবকের সে সব ছিল না। অণুচক্রিকার পরিমাণও যথেষ্ট ছিল। রাত তিনটে নাগাদ খিঁচুনি হয়। ভোরে তিনি মারা যান।’’ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এনসেফ্যালাইটিসের কারণেই যে ওই যুবক মারা গিয়েছেন, এ ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই। এনসেফ্যালাইটিসের সঙ্গে ডেঙ্গি হয়তো ছিল। কিন্তু ডেঙ্গির কারণে যে শারীরিক জটি‌লতা হয়, তা ওঁর ছিল না। ওঁর মস্তিষ্কে প্রদাহ হয়েছিল। এটা এনসেফ্যালাইটিসে হয়।’’

রিষড়ার পুরপ্রধান বিজয়সাগর মিশ্র জানান, যেখানে যেখানে জ্বরের খবর আসছে, সেখানে বাড়তি নজর দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা এলাকায় গিয়ে জ্বরের তথ্য সংগ্রহ করছেন। সাফাইয়ের পাশাপাশি মশার লার্ভা মারতে তেল ছড়ানো হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement