রবীনকে মারধর করেন এলাকাবাসীরা। মঙ্গলবার, হাওড়ায়। নিজস্ব চিত্র
কয়েক বছর ধরেই স্থানীয় যুবকদের মধ্যে বাড়ছিল নেশাগ্রস্তের সংখ্যা। এলাকায় মাদক ঢোকা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে উৎকণ্ঠাও বাড়ছিল। অথচ পুলিশকে বারবার অভিযোগ জানিয়েও ফল না মেলায়, নিজেরাই এলাকায় নজরদারি শুরু করেছিলেন তাঁরা। সেই নজরদারির সুফল মিলল মঙ্গলবার দুপুরে হাতেনাতে। হাওড়ার কোনা হাই রোড এলাকায় মাদক-সহ ধরা পড়লেন এলাকারই এক যুবক। পরে তাঁকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেন ক্ষিপ্ত জনতা। ধৃতের নাম রবীন কর্মকার। তাঁর কাছ থেকে হেরোইন-সহ কয়েক হাজার টাকা উদ্ধার হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকার যুবকদের মধ্যে কয়েক বছর ধরেই মাদকাসক্তের সংখ্যা বাড়ছিল। ছিঁচকে চুরিও বেড়ে গিয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দা স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘কোনা এলাকার গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে উড়ালপুলের নীচে প্রচুর গাড়ি থাকে। মাঝেমাঝেই গাড়ির ব্যাটারি ও যন্ত্রাংশ চুরি যাচ্ছিল। মাদকের টাকা জোগাড়ের জন্যই সম্ভবত মাদকাসক্তেরা চুরি করত।’’
এ দিন দুপুরে ওই এলাকায় মাদক বিক্রি করতে গিয়ে স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়েন রামকৃষ্ণপল্লির বাসিন্দা রবীন। ধৃতের কাছ থেকে মিলেছে প্রায় এক গ্রাম হেরোইন-সহ কয়েক হাজার টাকা। অথচ কোনা মোড়ে সর্বক্ষণ পুলিশি প্রহরা সত্ত্বেও কী ভাবে মাদক বিক্রি হচ্ছে, সেটা বুঝতে পারছিলেন না এলাকাবাসী। পরিবারের সদস্যদের মাদকের হাত থেকে বাঁচাতে অবশেষে নিজেরাই নজরদারি শুরু করেছিলেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে রবীন জানিয়েছেন, প্রায় আট বছর ধরে মাদক পাচারের কাজ করে চলেছেন ওই যুবক। হাওড়া স্টেশন চত্বর থেকে নিয়মিত এক গ্রাম মাদক তিন হাজার টাকা দিয়ে কিনে আনেন তিনি। সেখান থেকে এনে কোনা মোড়ের গোপন ঠেকে বিক্রি করেন রবীন। ছোট ছোট পুরিয়ার প্রতিটি ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি করতেন তিনি।
মাদকাসক্তদের জন্যই উড়ালপুলের নীচে পার্কিং করা চারচাকা গাড়ির ব্যাটারি মাঝেমধ্যেই চুরি হয় বলে দাবি এলাকাবাসীর। কী ভাবে দীর্ঘদিন পুলিশের নজর এড়িয়ে এই ব্যবসা চালিয়ে গেলেন ওই যুবক, তা নিয়ে ধন্ধে পড়েছেন স্থানীয়েরা। পুলিশের দাবি, মাদক বিক্রির কথা তাঁরা জানতেন না।