সচেতন: শব্দদূষণের বিরুদ্ধে চলছে মিছিল। —নিজস্ব িচত্র
এক দিকে শব্দবাজির কানফাটানো আওয়াজ, অন্য দিকে ডিজে-র দৌরাত্ম্য। দুই শব্দ-দানবের তাণ্ডবে কালীপুজোর সময় প্রাণান্তকর অবস্থা হয় অনেকেরই। সেই দানবদের বোতলবন্দি করার দাবিতে হুগলিতে এ বার পথে নামলেন মহিলারা। শুক্রবার জাঙ্গিপাড়ার রাজবলহাটে তাঁরা সভা এবং মিছিল করলেন।
রাজবলহাটের দু’টি সংস্থার উদ্যোগে সম্প্রতি মহিলাদের নিয়ে একটি দল তৈরি করা হয়েছে। ওই দলের ডাকেই এ দিন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। স্থানীয় হাটতলা বাজারে অন্তত ৬০ জন মহিলা জড়ো হন। সেখানে তাঁরা পথসভা করেন। শব্দবাজি এবং ডিজে থেকে উৎপন্ন আওয়াজের কুপ্রভাব নিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা হয়। পথসভার পরে তাঁরা মিছিল করেন। মিছিলকারীদের হাতে ছিল শব্দদূষণ বিরোধী প্ল্যাকার্ড, মুখে স্লোগান। রাজবলহাট হাসপাতালের সামনে মিছিল শেষ হয়।
ওই কর্মসূচিতে যোগ দেওয়া মহিলাদের অনেকেই জানান, এমনিতেই ডিজে বক্সের জন্য বছরভর সমস্যায় পড়তে হয়। সারা বছরই ধর্মীয় নানা উৎসব থেকে পারিবারিক অনুষ্ঠান— সবেতেই তারস্বরে ডিজে বাজে। কালীপুজোর সময় এর সঙ্গে যোগ হয় শব্দবাজি। তবে এ বার দুর্গাপুজোর সময় এবং বিসর্জনের শোভাযাত্রায় ডিজের দাপট অনেকটা নিয়ন্ত্রিত ছিল। পুলিশও সক্রিয় ছিল। কিন্তু কালীপুজোর সময় ডিজে এবং শব্দবাজি কতটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে, তা নিয়ে তাঁরা সন্দিহান। তবে এই বিষয়ে সচেতনতা ছড়াতে
ধারাবাহিক কর্মসূচি নিতে চাইছেন মহিলারা। ঠিক হয়েছে, দিন কয়েক পরে ফের তাঁরা রাস্তায় নামবেন। মিছিল করা হবে। পুলিশ-প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। শব্দবাজির বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি বিভিন্ন পুজো কমিটির কাছেও আবেদন করা হবে যাতে তাঁরা ডিজে বক্স না বাজান।
ওই মহিলাদের পক্ষে লক্ষ্মী মুখোপাধ্যায়, সীমা দাস, সুপ্রীতি শীলরা বলেন, ‘‘শব্দবাজি এবং ডিজের আওয়াজে মানুষের শরীরে মারাত্মক প্রভাব পড়ে। শ্রবণশক্তি নষ্ট হতে পারে। হৃদরোগীদের পক্ষেও তা ভীষণ ক্ষতিকর। এই বিষয়টিই সবাইকে বোঝানোর চেষ্টা করছি আমরা।’’
হুগলি জেলা (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার তথাগত বসু বলেন, ‘‘নিষিদ্ধ শব্দবাজির বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযান চালাবে। শব্দবাজি বা ডিজে নিয়ে নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে, সাধারণ মানুষ সচেতন হলে তার থেকে ভাল কী হতে পারে! ওই মহিলারা সচেতনতা ছড়ানোর যে কাজ করছেন, তা প্রশংসারযোগ্য।’’