দগ্ধ: পুড়ে গিয়েছে প্রয়োজনীয় নথিও। —নিজস্ব চিত্র।
গ্যাস সিলেন্ডার ফেটে জখম হলেন এক মহিলা। মঙ্গলবার ভোরে পান্ডুয়ার সাতঘড়িয়া গ্রামের ঘটনা। গুরুতর জখম অবস্থায় আজমিরা বিবি নামে ওই মহিলা পান্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, আগুন লাগার পর দমকলে ফোন করা হলেও কোনও সাহায্য মেলেনি। শুধু তাই নয়, ঘটনার পরও খবর দেওয়া হয়েছিল দমকলে। তখনও দমকলে ফোন বেজে গিয়েছে। কেউ ফোন ধরেননি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরে ওই গৃহবধূ রান্না করছিলেন। সেই সময়ই গ্যাস সিলেন্ডার ফেটে আগুন ছড়িয়ে যায়। তখন ঘরেই ঘুমোচ্ছিল দুই শিশুও। স্থানীয়দের চেষ্টায় উদ্ধার করা হয় ওই শিশুদের। পুকুরের জল নিয়ে এলাকার মানুষ আগুন আয়ত্তে আনেন। গ্যাস সিলিন্ডার ফাটার সঙ্গে সঙ্গে ঘরের টিনের চাল উড়ে যায়। ঘরের আসবাব সব পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকায় আগুন লাগলে মূলত খবর দেওয়া হয় বাঁশবেড়িয়ার দমকলকেন্দ্রে। সাতঘরিয়া গ্রাম থেকে সেই কেন্দ্র প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে। মঙ্গলবার ভোরে সিলিন্ডার ফেটে আগুন লাগার পর স্থানীয়রা ফোন করেন দমকলকেন্দ্রে। কিন্তু ফোন বেজে গিয়েছে। সাহায্য মেলেনি এতটুকু। ফলে হাত লাগান স্থানীয়রাই। কাছের পুকুর থেকে বালতি বালতি জল তুলে ঢালা হয় বাড়িতে। এরপরই আয়ত্তে আসে আগুন।
তবে আগুনে পুড়ে গিয়েছে আজমিরা বিবির বহু গুরুত্বপূর্ণ নথি। বাড়ি বাড়ি পরিচারিকার কাজ করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘সকালে কাজে যাওয়ার আঘে রান্না সারি। এ দিনও রান্না করছিলাম। হঠাৎ সিলিন্ডারটা বিকট শব্দ করে ফেটে গেল। তারপর সারা ঘরে আগুন ছড়িয়ে গেল।’’ তাঁর আফশোস, ‘‘বাড়ি তৈরির জন্য চল্লিশ হাজার টাকা জমিয়েছিলাম। সেই সব টাকা পুড়ে গিয়েছে।’’
তবে স্থানীয়দের ক্ষোভ দমকলের ভূমিকা নিয়েও। স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল কালাম বলেন, ‘‘এ দিন ভোরে এমন ঘটনার পর আমরা ব্যাপারটা সামাল দিলাম। কিন্তু এর থেকে বড় আগুন লাগলে কী হবে? যে দমকল থেকে কোনও সাহায্য মেলে না, সেটা থেকে কী লাভ?’’
এ দিন বাঁশবেড়িয়া দমকল কেন্দ্রে যোগাযোগ করা হলে প্রথমে কেউ ফোন আসার কথা মানতেই চাননি। পরে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মীর সাফাই, ‘‘এ দিন ভোরে ফোন খারাপ ছিল। তাই আমরা কোনও খবর পাইনি।’’ কিন্তু এমন প্রয়োজনীয় পরিষেবা কেন্দ্রের ফোন সারানো হল না কেন? জবাব মেলেনি।