মিষ্টি ব্যবসায়ীকে মিষ্টি-মালা দিচ্ছেন এক পুলিশকর্মী। ছবি: তাপস ঘোষ
শনিবার, লকডাউনের সকাল। হুগলি মোড় কার্যত ফাঁকা। একটি মিষ্টির দোকানের ঝাঁপ খোলা। টহলরত পুলিশকর্মী সেখান থেকে এক প্যাকেট মিষ্টি কিনলেন। জোগাড় করা হল গাঁদার মালা। তারপরে সেই মিষ্টি এবং মালা তুলে দেওয়া হল সেই দোকানির হাতেই!
লকডাউন উপেক্ষা করে কেউ পুলিশের তাড়া বা ধমক খেয়েছেন। কানধরে ওঠবস, ডন-বৈঠকের ‘সাজা’ও চোখে পড়েছে। এ বার হুগলির ওই ঘটনায় দেখা গেল পুলিশের ‘গাঁধীগিরি’। ভুল বুঝে ওই ব্যবসায়ী ক্ষমা চেয়ে নেন। বন্ধ করে দেন দোকান। পরে থানায় নিয়ে গিয়ে তাঁকে একপ্রস্থ বুঝিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
আগের মতো এ দিনও হুগলিতে লকডাউন কার্যত সফল। রাস্তায় গাড়িঘোড়া চলেনি। দোকানপাট বন্ধ ছিল। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া মানুষ পথে বেরোননি। তবু যাঁরা অকারণে বাড়ির বাইরে পা রেখেছেন, চোখে পড়লেই পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। শ্রীরামপুরে পুলিশকে অলিগলিতেও ঢুকতে দেখা গিয়েছে। চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর জানান, লকডাউন ভাঙার অভিযোগে বিকেল ৪টে পর্যন্ত ১৬৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রামীণ হুগলিতেও পুলিশের কড়া নজরদারি ছিল। পান্ডুয়ার ক্ষীরকুণ্ডিতে কয়েক জন যুবক সাইকেল নিয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। পুলিশের তাড়া খেয়া তাঁরা সটান পানাপুকুরে ঝাঁপ দেন। বিকেলে বলাগড়ের কামারপাড়ায় কিছু ছেলেকে ফুটবল খেলতে দেখা যায়। আরামবাগ মহকুমায় সাধারণ মানুষ রাস্তায় বিশেষ নামেননি। ফলে, পুলিশকে তেমন গা ঘামাতে হয়নি। পুলিশ সুপার তথাগত বসু জানিয়েছেন, লকডাউন উপেক্ষা করায় বিকেল পর্যন্ত ২১ জনকে আটক করা হয়েছে।
গ্রামীণ হাওড়াও শুনশান ছিল। বাগনান, আমতা, উলুবেড়িয়া, উদয়নারায়ণপুর, ডোমজুড় সর্বত্র দেখা গিয়েছে একই ছবি। মুম্বই রোডে অত্যাবশকীয় পণ্যের গাড়ি এবং অ্যাম্বুলান্স ছাড়া অন্য গাড়ি চলেনি। পুলিশের নজরদারি ছিল। তবে লোকজন বাইরে না বেরনোয় পুলিশকে কার্যত কিছুই করতে হয়নি।