সমস্যা: মিলছে না কৃষি শ্রমিক। খেতে নেমেছেন চাষিরাই। বৈদ্যবাটীতে ছবিটি তুলেছেন কেদারনাথ ঘোষ
করোনার ধাক্কায় কৃষি ক্ষেত্রে সার, কীটনাশক এবং বীজ সরবরাহের সমস্যা দেখা দিয়েছে হুগলিতে। বন্ধ হয়ে যাওয়া ওই সব কৃষিপণ্যের দোকান সরকারি নির্দেশে শুক্রবার খুলেছে। কিন্তু সেখানে মাল সরবরাহ হচ্ছে না বলে অভিযোগ। তার জেরে সার ও কীটনাশক নির্ভর বোরো ধানের চাষ ব্যাহত হচ্ছে।
আরামবাগের রামনগরের চাষি বিদ্যাপতি বাড়ুইয়ের অভিযোগ, ‘‘এক সপ্তাহের মধ্যে বোরো ধান ফলতে শুরু করবে। শেষ দফায় বিঘাপিছু ৮ কেজি ইউরিয়া এবং ৮ কেজি পটাশ দিতে হয়। কিন্তু দোকানে জিনিস নেই। জমিতে কীটনাশক দিতে হয় তিন বার। মাজরা পোকা, শোষক পোকার ওষুধ না দিলে ধান সাদা হয়ে যাবে। কিন্তু সেই কীটনাশক পাওয়া যাচ্ছে কই?”
চাষের প্রয়োজনীয় বীজও পাওয়া যাচ্ছে না বলে চাষিদের অভিযোগ। তাঁদের আশঙ্কা, এখনই উচ্ছে, ঝিঙে, কুমড়ো, লাউ চাষের সময়। কিন্তু বীজ না পাওয়া গেলে ওই সব ফসলের চাষ বন্ধ হয়ে যাবে। আরামবাগ থানা সংলগ্ন সার, কীটনাশক এবং বীজের দোকানের মালিক পীযূষকান্তি দত্ত বলেন, ‘‘মাল সরবরাহ হচ্ছে না। সরকারি দফতরে অভিযোগ জানিয়েছি।’’ একই পরিস্থিতি শ্রীরামপুর মহকুমার বৈদ্যবাটীতেও।
এখানে আবার অভাব কৃষি-শ্রমিকের। চন্দ্রশেখর ঘোষ নামে এক চাষি বলেন, "আমরা চাষের জন্য শ্রমিক পাচ্ছি না। তাই সার, কীটনাশক নিয়ে আসতে পারছি না। কৃষিজমির পরিচর্যা কে করবে? বোরো চাষে পরিচর্যা না হলে ফলন ভাল হয় না। রোদের তাপ বাড়ছে, এই সময় বাড়বে পোকার উপদ্রব। কিন্তু কৃষি-কর্মী নেই।’’অবিলম্বে জোগান স্বাভাবিক না হলে ফসল নষ্ট হবে বলে আশঙ্কা বলাগড় ব্লকেও। বলাগড়ের চরকৃষ্ণবাটীর চাষি কার্তিক বিশ্বাস বলেন, ‘‘ওষুধ না-পেলে তো মাজরা পোকা সব শেষ করে দেবে!’’
গুপ্তিপাড়া অঞ্চল সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির ম্যানেজার দেবল ঘোষ জানান, শুক্রবার থেকে সার বিক্রি শুরু হয়েছে। ক্রেতাদের মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলা হয়েছে। এই সমবায়ে পর্যাপ্ত সার মজুত রয়েছে।