বন্ধ রয়েছে মদের দোকান। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
পিঠে-পায়ে পুলিশের লাঠি পড়ছে তো কী! মদ না-খেয়ে আর কত দিন থাকা যায়!
লকডাউনে মদের দোকান বন্ধ। কিন্তু আরামবাগের মদ্যপেরা আর বিধিনিষেধ মানতে চাইছেন না। জোর করে ব্যবসায়ীকে দোকান খুলিয়ে মদ কিনতে হামলেও পড়ছেন তাঁরা। জেগে উঠেছে অনেক চোলাই ভাটিও।
গত বুধবার বিকেলে পুরশুড়ার সিনেমাতলায় এক মদ ব্যবসায়ীকে ঘর থেকে তুলে এনে দোকান খোলানোর অভিযোগ ছিল স্থানীয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে। দোকান খোলায় ক্রেতারা হামলে পড়েন। বিশৃঙ্খলা হয়। বিডিও অচিন্ত্য ঘোষ পুলিশ এনে ভিড় ছত্রভঙ্গ করেন। দোকানদারকে মারধরের অভিযোগও ওঠে মদ্যপদের একাংশের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার একই রকম ঘটনা ঘটে কামারপুকুর চটিতে। সেখানেও শ’চারেক ক্রেতাকে হটাতে পুলিশকে লাঠি চালাতে হয়। সে দিনই আরামবাগের হাসপাতাল রোডে মদের দোকান খোলামাত্র এমন ভিড় হয়ে যায় যে আধ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ এসে ক্রেতাদের হটিয়ে দোকান বন্ধ করায়।
লকডাউনের প্রথম থেকেই আরামবাগ জুড়ে মদের কালোবাজারি শুরু হয়। লুকিয়ে-চুরিয়ে ৩৫০ টাকার রাম আরামবাগ শহরে ১০০০-১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৪২০ টাকার হুইস্কি বিক্রি হচ্ছে ১২০০-১৪০০ টাকায়। ৮৫ টাকার দেশি মদ বিক্রি হচ্ছে ২৬০-৩০০ টাকায়। এমনকি, চোলাইয়ের দামও বেড়েছে।
আবগারি দফতরের কর্তাদের একাংশ মনে করছেন, যাঁরা নিয়মিত মদ খান, বিশেষ করে রংমিস্ত্রি, বাস-চালক, দিনমজুরদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষের হাতে টাকা কমে আসছে। ফলে, বেশি দামে আর মদ কিনতে না-পারায় তাঁদের একাংশ চোলাইয়ের ঠেকে যাওয়া শুরু করেছেন। আর গৃহবন্দির একঘেঁয়েমি কাটাতে মধ্যবিত্তদের একাংশ এলাকার মদ ব্যবসায়ীদের জোর করে দোকান খোলাচ্ছেন। দোকান খোলার ছাড়পত্র দেওয়ার জন্য ওই দফতরেও
অহরহ ফোন আসছে। ওই কর্তারা মানছেন, গোঘাটের মথুরা, পুরশুড়ার রাউতাড়া ইত্যাদি জায়গায় ফের রমরমিয়ে চোলাই তৈরি করে সাইকেলে পাচার শুরু হয়েছে। দফায় দফায় অভিযান চালানো হচ্ছে বলে তাঁরা জানিয়েছেন।
মহকুমার সবচেয়ে পুরনো বিদেশি মদের দোকানটি রয়েছে শহরের হাসপাতাল রোডে। দোকানের মালিক দেবু কবিরাজ বলেন, “শুনেছিলাম, মদের হোম ডেলিভারি করা যাবে।
তাই বৃহস্পতিবার সকালে গিয়ে দোকান খুলেছিলাম। যে ভাবে ভিড় হল, ভয় পেয়ে গিয়েছি। এখন শুনছি, দোকান খোলার কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি।"