দূষিত খালের জল। — নিজস্ব চিত্র।
নদীদূষণ ঠেকাতে নানা বিধিনিষেধ জারি রয়েছে। কিন্তু অনেক ক্ষে্ত্রেই নজরদারির ফাঁক গলে দূষণ অব্যাহত। হাওড়ার শ্যামপুর-২ ব্লকের অনন্তপুরে একটি বস্ত্র কারখানার দূষিত রাসায়নিক মিশ্রিত রঙিন জল সংলগ্ন অনন্তপুর খালে পড়ে রূপনারায়ণে গিয়ে মিশছে। দেখার কেউ নেই।
খালের জল ইতিমধ্যেই রঙিন হয়ে গিয়েছে। বহু মাছ মরছে। খালপাড়ের বাসিন্দাদের অভিযোগ, দূষণের কারণে খালের জল তাঁরা ব্যবহার করতে পারছেন না। সেচের কাজে ওই জল ব্যবহার করতে গিয়েও ক্ষতি হচ্ছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে বারে বারে জানিয়েও লাভ হয়নি। কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ধমকও খেতে হয়েছে বলে তাঁদের অভিযোগ।
ওই খালে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন বেশ কিছু মানুষ। তাঁদেরই একজন বলেন, ‘‘খালে কারখানার রঙিন জল মিশছে বলে মাছ মরে যাচ্ছে। ফলে, আমাদের উপার্জন কমছে।’’
ওই বস্ত্র কারখানায় কাপড় রং করার কাজ হয়। প্রায় ৫০০ শ্রমিক কাজ করেন। কারখানার অধিকর্তা নবনিক গুজারির দাবি, ‘‘কারখানায় রাসায়নিক মিশ্রিত জল ফেলার নিজস্ব ব্যবস্থা করা আছে। কোনও রকম রাসায়নিক মিশ্রত জল খালে বা রূপনারায়ণে মেশে না। কিছুদিন আগে কারখানার কিছু জল বের করা হয়েছিল। তাতে কোনও রাসায়নিক মিশ্রিত ছিল না। গ্রামবাসীরা অযথা কারখানার বদনাম করছেন।’’
নবনিক ওই দাবি করলেও গ্রামবাসীদের মতো একই অভিযোগ তুলেছে হাওড়া জেলা যৌথ পরিবেশ মঞ্চও। মঞ্চের সম্পাদক শুভদীপ ঘোষ বলেন, ‘‘রাসায়নিক মিশ্রিত রঙিন জল খালে পড়ে রূপনারায়ণে মিশছে। এ বিষয়ে বারবার স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। কোনও কাজ হয়নি। এ বার দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকেও জানাব। তাতেও কাজ না হলে গ্রামের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করব।’’ এ নিয়ে জেলা দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
বিডিও ফারহানাজ খানাম জানিয়েছেন, তিনি সদ্য দায়িত্ব নিয়েছেন। খাল বা নদীদূষণ নিয়ে কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা বলার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।