Bally Municipal Corporation

বালি পুরসভা ফের পৃথক করার নেপথ্যেও কি ভোটের অঙ্ক

হাওড়া পুরসভা থেকে বালিকে আলাদা করার এই পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বালির দীর্ঘদিনের বাসিন্দা, লেখিকা সুনন্দা শিকদার।

Advertisement

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২১ ০২:০৭
Share:

—ফাইল চিত্র

পাঁচ বছর আগে হাওড়ার সঙ্গে বালি পুরসভার সংযুক্তিকরণ ভাল ভাবে মেনে নেননি বালির বাসিন্দারা। এর প্রতিবাদে হাওড়ার জেলাশাসকের কাছে একাধিক বার দরবার করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু, কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এখন ফের বালি পুরসভাকে আলাদা করার সরকারি সিদ্ধান্তে তাই উচ্ছ্বসিত ওই বাসিন্দারা। সকলেরই বক্তব্য, যে সিদ্ধান্ত বালির বাসিন্দাদের ভাবাবেগে আঘাত করেছিল, রাজ্য সরকার তা ফিরিয়ে নিতে উদ্যোগী হওয়ায় মানুষের ক্ষোভ অনেকটাই প্রশমিত হবে।

Advertisement

হাওড়া পুরসভা থেকে বালিকে আলাদা করার এই পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বালির দীর্ঘদিনের বাসিন্দা, লেখিকা সুনন্দা শিকদার। তিনি বলেন, ‘‘অত্যন্ত সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। হাওড়া পুরসভার সঙ্গে যখন বালিকে যুক্ত করা হয়েছিল, আমাদের খারাপ লেগেছিল। আপত্তিও করেছিলাম। তা করে আমাদের উপকার তো হয়ইনি, বরং অসুবিধা হয়েছে। আর্বজনা সাফাই, নিকাশির সংস্কার— কোনও পরিষেবাই মিলত না। আমাদের অভাব-অভিযোগ শুনবেন, এমন কেউ ছিলেন না। তা ছাড়া বালি পুরসভা বহু পুরনো। এর সঙ্গে আমাদের আবেগ জড়িত।’’

পৃথক বালি পুরসভা করার সরকারি সিদ্ধান্তে উচ্ছ্বাস গোপন করেননি বালির আর এক পুরনো বাসিন্দা, রাজ্যের প্রাক্তন অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘হাওড়ার সঙ্গে বালিকে যোগ করার সিদ্ধান্তের ঘোরতর বিরোধী ছিলাম। গত পাঁচ বছরে পুর পরিষেবা বলতে কিছুই ছিল না। সামান্য কাজের জন্যও মানুষকে হাওড়ায় দৌড়তে হত।’’

Advertisement

রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বালি পুরসভার শেষ প্রাক্তন চেয়ারম্যান, সিপিএমের অরুণাভ লাহিড়ী। তিনি বলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্তে বালির মানুষ হিসেবে আমি খুবই খুশি। পুরসভা হওয়ার পরেও বালিতে কোনও বরো হয়নি। মানুষ কোনও পরিষেবা পাননি। এখন পিকে-র টিম দিয়ে সমীক্ষা করে তৃণমূল বুঝতে পারছে, বালিকে হাওড়ার সঙ্গে এক করে দেওয়ায় মানুষের মনে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। যার প্রভাব পড়তে পারে আসন্ন নির্বাচনে। তাই এই সিদ্ধান্ত।’’

বিজেপির পক্ষ থেকে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, বালির দিকে নিশ্চিন্দা ও অভয়নগরের কিছু অংশ যোগ করে হাওড়া পুরসভায় ১২০টি ওয়ার্ড করতে চেয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু বিজেপির পক্ষ থেকে মামলা করে তা আটকে দেওয়া হয়। দলের জেলা সভাপতি (সদর) সুরজিৎ সাহা বলেন, ‘‘এই মামলার জন্য তো বটেই, সেই সঙ্গে বর্তমানে হাওয়া যখন বিজেপির দিকে এবং বালির মানুষের ভাবাবেগে আঘাত লাগায় তাঁরা ক্ষুব্ধ, তখন বাধ্য হয়েই হাওড়া পুরসভা থেকে বালিকে আলাদা করে দেওয়া হচ্ছে।’’

বালির বর্ষীয়ান তৃণমূল কর্মী ভাস্করগোপাল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষের মন বোঝার চেষ্টা করেন। তাঁদের দুঃখ-কষ্ট, ভাবাবেগকে সম্মান দেন। বালির অধিকাংশ মানুষ চাইছেন, পুরসভা হিসেবে বালি স্বাধীন ভাবে থাকুক। মানুষের সেই ভাবাবেগকেই মর্যাদা দিয়েছেন তিনি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement