প্রতীকী ছবি।
১০০ দিন প্রকল্পের কাজ না দেওয়ার অভিযোগে আরামবাগের তৃণমূল পরিচালিত মলয়পুর-১ পঞ্চায়েতের এক সদস্যদের বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন শ্রমিকরা। বৃহস্পতিবার সকালে ৫ নম্বর সংসদ (৫৬ নম্বর এবং ৫৭ নম্বর বুথ) পূর্ব হরিপুরে গৌরী ঘোষ নামে ওই মহিলা সদস্যকে হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামলায়।
পঞ্চায়েত সদস্যর অভিযোগ, “বিজেপি-ঘনিষ্ঠ কয়েকজন শ্রমিক অন্যায়ভাবে কাজের আবেদন পত্রে (৪-ক ফর্ম) স্বাক্ষর করতে বলছিলেন। কিন্তু ওই আবেদনপত্র স্বাক্ষর করা নিয়ে পঞ্চায়েতের নির্দেশিকা বা চিঠি পাইনি। তাই সই করতে আপত্তি করি। তার জেরেই এই হামলা। বিষয়টা পঞ্চায়েত প্রধান এবং ব্লক প্রশাসনে জানানো হয়েছে।”
ঘটনার জন্য নিজের দলের পঞ্চায়েত প্রধান দীপালি সাহাকে দায়ী করে সদস্য বলেন, “এতদিন ঠিক ছিল শ্রমিকদের কাজের আবেদন পত্রে সংশ্লিষ্ট এলাকার সুপারভাইজাররা সই করলেই চলবে। কিন্তু কারও সঙ্গে আলোচনা না করেই প্রধানের হঠকারী সিদ্ধান্তের জন্য হেনস্থা হতে হল।”
প্রধান দীপালি সাহার অবশ্য দাবি, “ওই সদস্য পঞ্চায়েতেই আসেন না। জেলা এবং ব্লক প্রশাসন থেকে মাস তিন আগে আমাদের পঞ্চায়েতে ৪২ হাজার শ্রমিককে কাজ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল ডিসেম্বরের মধ্যে। মাস পেরিয়ে গেছে অর্ধেকও হয়নি। মানুষ কাজ চাইছেন। কাজ যখন দেওয়া হচ্ছে তখন সংশ্লিষ্ট এলাকার সদস্য ক্ষোভ জানাচ্ছেন। কাজের ব্যাপারে তাঁরা জানতে পারছেন না। এই বিভ্রান্তি ঘোচাতেই কাজ শুরুর আগে কাজের আবদেনপত্রে এলাকার সদস্যর স্বাক্ষর নিতে বলা হয়েছে।”
বিমল সাঁতরা, মিনতি সাঁতরা, শঙ্কর ঘোষ প্রমুখ শ্রমিকদের অভিযোগ, “গ্রামের মানুষ বিজেপির দিকে ঝোঁকায় লোকসভা ভোটের সময় থেকে কোনও কাজ পাওয়া যাচ্ছে না। ব্লক প্রশাসন থেকে কাজের ছাড়পত্র এলেও তৃণমূলের লোকেরাই ওই কাজ করতে দিচ্ছে না। এরই প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।”
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকে ১০০ দিন কাজ প্রকল্পে কাজ হয়নি সেখানে। রাজনৈতিক অস্থিরতায় পুরনো তৃণমূল নেতা-কর্মী সুপারভাইজাররাও বেপাত্তা। দাবিমতো বিজেপি ঘনিষ্ঠ নতুন সুপারভাইজার নিয়োগ হয়েছে। তা মানতে না চেয়েই কাজ নিয়ে এই টালমাটাল অবস্থা।
ব্লক প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “১০০ দিন কাজ প্রকল্পের কাজ নিয়ে পঞ্চায়েতটিতে ক্ষোভ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে কাজ শুরু করতে বলা হলেও হচ্ছিল না। সম্প্রতি ব্লক প্রশাসন লেগে থেকে বেশ কিছু নদী বাঁধ সংস্কারের কাজ চালু করা হলেও, এখনও পুরোদমে কাজ শুরু হয়নি।”