টহল: গোলমালের পর এলাকায় পুলিশ-র্যাফ। — নিজস্ব চিত্র
একুশে জুলাইয়ের সমাবেশে তাঁরা ধর্মতলায় যেতে চাননি। সেই ‘অপরাধে’ তৃণমূল হুমকি দেয়, এই অভিযোগ নিয়ে তাঁরা দ্বারস্থ হয়েছিলেন পুলিশের। কিন্তু পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ। আর এই ‘পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা’ প্রতিবাদে সোমবার সকালে গ্রামবাসীর একাংশের অবরোধকে ঘিরে উত্তাল হল আমতার গুজারপুর। অবরোধ তুলতে গেলে পুলিশের সঙ্গে গ্রামবাসীদের ধস্তাধস্তি হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে অবরোধকারীদের একাংশ ইট ছোড়ে। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। অবরোধকারীদের হটাতে পুলিশ লাঠিও চালায় বলে অভিযোগ।
পুলিশ লাঠি চালানোর অভিযোগ মানেনি। পুলিশের দাবি, হুমকির অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে গ্রামবাসীদের জানানো হয়েছিল। তা সত্ত্বেও অফিসের ব্যস্ত সময়ে অবরোধ করা হল।
২১ জুলাইয়ের সমাবেশে যাওয়ার জন্য জোর করা বা হুমকি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। উলুবেড়িয়া উত্তরের বিধায়ক তথা শ্রম দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী নির্মল মাজির দাবি, ‘‘সমাবেশে যাওয়ার জন্য কাউকে জোর করা বা হুমকি দেওয়া হয়নি। বিজেপি ওখানে কলকাঠি নাড়ছে। শান্ত পরিস্থিতিকে অশান্ত করার খেলায় মেতেছে।’’ তৃণমূলের অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপির হাওড়া (গ্রামীণ) জেলা সভাপতি অনুপম মল্লিক বলেন, ‘‘গ্রামবাসীরা তৃণমূলের অত্যাচারের প্রতিবাদে নিজে থেকে আন্দোলনে নেমেছেন। আমাদের কোনও ভূমিকা নেই।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অবরোধকারীরা চন্দ্রপুর পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা। তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে যোগ দিতে যাওয়ার জন্য দলের নেতারা তাঁদের জোর করেন বলে অভিযোগ। গ্রামবাসীদের তাঁদের জানিয়ে দেন, যেহেতু পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়ে তাঁদের ভোট দিতে দেওয়া হয়নি, তাই তাঁরা সমাবেশে যাবেন না। তারপরেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে রবিবার দুপুরে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। গ্রামবাসীরা রাতেই আমতা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানান। কিন্তু কেউ গ্রেফতার না-হওয়ায় সোমবার সকাল সাড়ে আটটা থেকে গুজারপুরে বড়পোলের কাছে গ্রামবাসীরা আমতা-রানিহাটি রোড অবরোধ শুরু করেন। অবরোধের জেরে কিছু বাস ঘুরে বাগনান হয়ে কলকাতা ও হাওড়ার দিকে রওনা দেয়। প্রায় এক ঘণ্টা পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।