Gondalpara Jute Mill

ফের অপমৃত্যু গোন্দলপাড়ার শ্রমিকের

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,  শ্যামার বাবা শিউচরণ দাস গোন্দলপাড়া চটকলের শ্রমিক ছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চন্দননগর শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২০ ০১:২০
Share:

প্রতিবাদ: শোকার্ত পরিজনরা। শ্যামা দাস (ইনসেটে) নিজস্ব চিত্র

চন্দননগরে বন্ধ গোন্দলপাড়া চটকলের শ্রমিকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর মিছিল চলছেই।

Advertisement

রবিবার রাতে এখানকার এক অস্থায়ী শ্রমিকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে মিল আবাসন থেকে। মৃতের নাম শ্যামা দাস (২৫)। তাঁর মৃত্যুর জন্য বন্ধ চটকলকেই দায়ী করছেন পরিবারের লোকেরা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্যামার বাবা শিউচরণ দাস গোন্দলপাড়া চটকলের শ্রমিক ছিলেন। তিনি মারা গিয়েছেন। তাঁর ছয় ছেলের মধ্যে শ্যামা ছোট। ২০১৪ সালে শ্যামা এই চটকলে তাঁত বিভাগের অস্থায়ী শ্রমিক হিসেবে যোগ দেন। মিল বন্ধ হওয়ার পর সংসার চালানোর তাগিদে কাজ করছিলেন। মাস ছ’য়েক আগে তাঁর বিয়ে হয়। পরিবারের লোকেরা জানান, শ্যামা শহরের মালাপাড়ায় বাড়িতে থাকতেন। মোহিনীবাগানে মিল আবাসনের শুতে যেতেন।

Advertisement

রবিবার দুপুরে খাওয়া সেরে তিনি আবাসনে যান। রাত ৯টা নাগাদ স্ত্রী নন্দিনী খাবার নিয়ে সেখানে গিয়ে দেখেন, ঘরের দরজা বন্ধ। জানলা দিয়ে দেখতে পান, গলায় ওড়নার ফাঁস লাগানো অবস্থায় স্বামীর দেহ ঝুলছে। নন্দিনীর চিৎকারে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে আসেন। পরিবারের অন্যরা পৌঁছন। চন্দননগর থানার পুলিশ এসে দরজা ভেঙে দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। পুলিশের অনুমান, আত্মঘাতী হয়েছেন শ্যামা।

সোমবার সকালে শ্যামার মা মুনিয়াদেবী বলেন, ‘‘মিলটা চালু না হলে সবাই এমন সন্তান-হারা হবে। শ্রমিক মহল্লায় অন্ধকার নেমে আসবে।’’ নন্দিনী বলছিলেন, ‘‘কাজ না পেয়ে স্বামী হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। দিনমজুরির সামান্য রোজগারে কোনও রকমে দিন গুজরান হচ্ছিল। কিন্তু স্বামী যে এমন সিদ্ধান্ত নেবেন, বুঝতে পারিনি।’’ স্থানীয় বাসিন্দা, ওই চটকলের শ্রমিক পবন দাসের কথায়, ‘‘আমরা যে জ্বালায় জ্বলছি, তার জন্য সরকার কিছুই করছে না। শুধু রাজনীতি হচ্ছে।’’

২০১৮ সালের ২৭ মে মিলে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’-এর বিজ্ঞপ্তি ঝোলান কর্তৃপক্ষ। তাতে হাজার পাঁচেক শ্রমিকের পরিবার বিপাকে পড়ে। লোকসভা ভোটের সময় মিল খুললেও কয়েক দিনের মধ্যেই ফের বন্ধ হয়ে যায়। শ্রমিকরা জানান, কখনও তাঁদের আবাসনে বিদ্যুৎ সংযোগ, কখনও জল বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের অভিযোগ, আর্থিক অনটনের জেরে গত এক বছরে শ্যামাকে নিয়ে এখানকার পাঁচ শ্রমিক আত্মঘাতী হলেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement