দুর্ভোগের শেষ, বছরান্তে দুই জেলায় প্রাপ্তি জোড়া সেতু

যানজট থেকে মুক্ত হল উলুবেড়িয়া

সোমবার থেকে খুলে গেল উলুবেড়িয়া লেভেল ক্রসিংয়ের উড়ালপুল। খড়্গপুরের একটি অনুষ্ঠান থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেতুটি উদ্বোধন করলেন। এ দিন থেকেই সেতুতে যান চলাচল শুরু হয়ে গেল। 

Advertisement

নুরুল আবসার, সুব্রত জানা

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:৫০
Share:

চালু: উলুবেড়িয়া লেভেল ক্রসিংয়ের উড়ালপুর। —নিজস্ব িচত্র


যানজটে অবরুদ্ধ হওয়ার হাত থেকে পাকাপাকি ভাবে রেহাই পেল উলুবেড়িয়া শহর।

Advertisement

সোমবার থেকে খুলে গেল উলুবেড়িয়া লেভেল ক্রসিংয়ের উড়ালপুল। খড়্গপুরের একটি অনুষ্ঠান থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেতুটি উদ্বোধন করলেন। এ দিন থেকেই সেতুতে যান চলাচল শুরু হয়ে গেল।

উলুবেড়িয়া লেভেল ক্রসিংয়ে এই সেতুটির জন্য শহরবাসীর দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। লেভেল ক্রসিংয়ের জন্য শুধু উলুবেড়িয়া শহরই যানজটের কবলে পড়ছিল না, উলুবেড়িয়া হয়ে শ্যামপুর যাওয়াও দুষ্কর হয়ে গিয়েছিল। তা ছাড়া, মহকুমা হাসপাতাল, মহকুমা প্রশাসনের অফিস, মহকুমা আদালত, পুরসভা— সর্বত্রই যাতায়াতের ক্ষেত্রে যানজট ছিল মস্ত গেরো। গাড়িগুলিকে কুড়ি মিনিট থেকে আধ ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছিল লেভেল ক্রসিং পার হওয়ার জন্য। গাদিয়াড়া, গড়চুমুক, ফুলেশ্বর সেচ বাংলোর মতো পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে যেতে হলেও লেভেল ক্রসিং পেরোতে হত। শীতকালে তার দু’দিকে গাড়ির লম্বা লাইন লেগে যেত। দুঃসহ যন্ত্রণা ভোগ করতে হত যাত্রীদের। বিপত্তি হত অন্য দিক দিয়েও। লেভেল ক্রসিংয়ে প্রায়ই ট্রাক বিগড়ে দীর্ঘক্ষণ ব্যাহত হত ট্রেন চলাচল।

Advertisement

এ সব দুর্ভোগ থেকে অবশেষে মুক্তি মিলল। এ দিন উদ্বোধন উপলক্ষে সেতুর কাছে একটি ছোট অনুষ্ঠান হয়। হাজির ছিলেন বিধায়ক পুলক রায়, ইদ্রিশ আলি, অরুণাভ সেন, কালীপদ মণ্ডল এবং উলুবেড়িয়া পুরসভার চেয়ারম্যান অভয় দাস। সাংসদ সাজদা আহমেদ সংসদে অধিবেশন চলায় হাজির থাকতে না পারলেও শুভেচ্ছা জানান। ছিলেন বহু সাধারণ মানুষও। অনুষ্ঠান‌টির আয়োজন করে উলুবেড়িয়া পুরসভা। পূর্ত (সড়ক) দফতর বা রেলের কেউ সেখানে ছিলেন না। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘রেলের কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তবে সেটা বড় কথা নয়। শেষ পর্যন্ত সেতুটি চালু হল, এ জন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে অভিনন্দন।’’

এই উড়ালপুল তৈরির জন্য প্রথম চেষ্টা করেন ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রয়াত নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন সমবায় মন্ত্রী রবীন ঘোষ। তিনি ২০০০ সালের মাঝামাঝি রেল মন্ত্রক এবং রাজ্য সরকারকে চিঠি লিখে উড়ালপুলের দাবি জানান। রাজ্য সরকার তাতে নীতিগত ভাবে সম্মতি দিলেও টাকার অভাবে কাজ এগোয়নি। প্রয়াত সাংসদ সুলতান আহমেদও কেন্দ্রের কাছে উড়ালপুলের জন্য দরবার করেন। ২০১৫ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে সেতুর কাজ শুরু হয়। জবরদখলকারীদের পুনর্বাসন সমস্যা মেটাতে এগিয়ে আসেন উলুবেড়িয়া দক্ষিণের বিধায়ক পুলক রায়-সহ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। জায়গা জবরদখলমুক্ত হলে ঝড়ের গতিতে কাজ হয়। ২০১৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে রেল লাইনের অংশ বাদ দিয়ে বাকি কাজ হয়ে যায়। নানা টানাপড়েনের পরে চলতি বছরের জুলাই মাসে ১০ ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ রেখে রেললাইনের উপরের অংশে উড়ালপুল জোড়া হয়। তারপরে বাকি ছিল সেতুতে আলো লাগানো, রাস্তায় পিচ ঢালা এবং দু’দিকে রেলিং বান‌ানো। সে সব কাজও শেষ হয় ৩০ নভেম্বরের মধ্যে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement