জ্বলছে পিক আপ ভ্যান। ডান দিকে, আগুন চালকের বাড়িতে।
স্কুল থেকে ফিরে বন্ধুদের সঙ্গে বাড়ির সামনে খেলতে গিয়েছিল দুই বোন। সেই সময়েই বালিভর্তি একটি পিক আপ ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পিষে দিল তাদের।
সোমবার বিকেলে সেরিনা খাতুন (১১) ও মেরিনা খাতুন (৯)-এর এ ভাবে মৃত্যুতে ধুন্ধুমার বেধে যায় উলুবেড়িয়ার বাহির গঙ্গারামপুরে। দুর্ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা পিক আপ ভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় কাছেই ভ্যানচালকের বাড়িতেও। যদিও তার আগেই ভ্যানচালক ও তার পরিবার পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ও দমকলের লোক এসে আগুন নিভিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। পিক আপ ভ্যানের চালককে ধরতে তল্লাশি চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
সেরিনা-মেরিনা
পুলিশ সূত্রে খবর, গঙ্গারামপুরে মেদিনীপুর ক্যানালের বাঁধের উপর বাড়ি জরির ওস্তাগর শেখ মোরসেলিনের। চার সন্তান, স্ত্রীকে নিয়ে বাস। সেরিনা ষষ্ঠ শ্রেণি ও মেরিনা চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত। এ দিন বিকেলে স্কুল থেকে ফিরে খেলতে গিয়েছিল তারা। রাস্তার ধারেই খেলছিল পাঁচজন। সওয়া চারটে নাগাদ বালিবোঝাই পিক আপ ভ্যানটি আচমকাই তাদের চাপা দেয়। ঘটনাস্থলেই মারা যায় সেরিনা ও মেরিনা। আহত তিনজনকে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে দুজনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। একজনকে ভর্তি করানো হয়েছে।
দুর্ঘটনার পরেই ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা পিক আপ ভ্যানে আগুন লাগায়। ভ্যানটির চালক স্থানীয় এক যুবক। তার বাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বাঁধের উপর দিয়ে সাধারণত গাড়ি চলে না। এ দিন পিক আপ ভ্যানে বালি বোঝাই করে নিয়ে যেতে গিয়েই ওই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
এ দিন মোরসেলিনের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল প্রতিবেশীরা সান্ত্বনা দিচ্ছেন সেরিনা-মেরিনার মাকে। মোরসেলিন বলেন, ‘‘রোজই স্কুল থেকে ফিরে খেলতে যেত ওরা। এ দিন হঠাৎ চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে ঘরের বাইরে বেরিয়ে দেখি সর্বনাশ হয়ে গিয়েছে।’’
(ছবি: সুব্রত জানা)