সংস্কার: চলছে সেতু সারাই। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
সংস্কারের পর বছর খানেকও কাটল না। অতিরিক্ত পণ্যবাহী ট্রাকের চাপে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া আরামবাগ মহকুমার দুই সেতুতে ফের সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। একটি আরামবাগের হরিণখোলায় মুণ্ডেশ্বরী নদীর উপর রামমোহন সেতু, অন্যটি পুরশুড়ায় দামোদরের উপর বিদ্যাসাগর সেতু। দুই সেতুর সংস্কারকাজের জন্য আরামবাগ-কলকাতা রাজ্য সড়কটি যানজটে হাঁসফাঁস করছে। মাসখানেক ধরে চলা এই সংস্কারকাজ নিয়ে পূর্ত দফতরের বিরুদ্ধে ঢিলেমির অভিযোগ তুলে হামেশাই ক্ষোভ-বিক্ষোভ এবং পথ অবরোধ করছেন স্থানীয় মানুষ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল।
মহকুমা পূর্ত দফতরের সহকারী ইঞ্জিনিয়ার নিরঞ্জন ভড় রবিবার বলেন, “আরও দিন পনেরো লাগবে সেতু দু’টি সংস্কারের কাজ শেষ হতে। অতিরিক্ত পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ে আমাদের তরফে পুলিশ ও প্রশাসনকে বারবার সতর্ক করা হলেও তা বন্ধ হয়নি। তার জেরেই সেতু দু’টির জোড়-সহ নানা অংশের ক্ষতি হচ্ছে। সেতুর আয়ু নিয়ে সংশয় দেখা দেওয়াতেই বারবার সেতুর ‘এক্সপ্যানশন জয়েন্ট’ মেরামত-সহ নানা কাজ করতে হচ্ছে।” সেতু দু’টির সংস্কার খাতে প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে বলেও তিনি জানান।
পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, নদীঘেরা আরামবাগ মহকুমায় ৯৭টি ছোট-বড় সেতু রয়েছে। যেখানে সেতুর স্বাভাবিক আয়ু ৪০ বছর ধরা হয়, সেখানে পুরশুড়া দিগরুইঘাটে মুণ্ডেশ্বরী নদীর উপর নবনির্মিত একটি সেতুটি ছাড়া অধিকাংশের নির্মাণকাল ১৯৬৫ সাল থেকে ১৯৭৭ সালের মধ্যে। ধারাবাহিক ভাবে সংস্কার করে গেলে সেগুলি আরও ১০-২০ বছর পর্যন্ত ভাল থাকার কথা। ওই সব সেতুর মধ্যে দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলার সঙ্গে কলকাতা এবং তারকেশ্বরের যোগাযোগের মূল মাধ্যম আরামবাগের পল্লিশ্রীতে দ্বারকেশ্বর নদীর উপর রামকৃষ্ণ সেতু, হরিণখোলার মুণ্ডেশ্বরীর উপর রামমোহন সেতু এবং পুরশুড়ায় দামোদরের উপর বিদ্যাসাগর সেতু বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। বিদ্যাসাগর সেতুর নির্মাণকাল ১৯৬২ সাল। রামকৃষ্ণ সেতু তৈরি হয় ১৯৬৫ সালে। রামমোহন সেতু তৈরি হয় তার বছর দশেক বাদে। অতিরিক্ত মাল বোঝাই গাড়ি চলাচল রুখতে না পারলে পুরনো এই সেতুগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে পূর্ত দফতর।
পরিবহণ দফতর এবং পুলিশ প্রশাসন থেকে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, আরামবাগ অনেকগুলো জেলার সংযোগস্থল হওয়ায় হওয়ায় গাড়ির চাপ অত্যধিক। তবে, অত্যধিক পণ্যবাহী গাড়ি রুখতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।