লেলিহান: জ্বলছে সিলিন্ডার ভর্তি ট্রাক। —িনজস্ব িচত্র
দুর্ঘটনার জেরে মঙ্গলবার গভীর রাতে সাঁকরাইলের রানিহাটিতে ভস্মীভূত হল এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারবোঝাই একটি ট্রাক। ট্রাকটি একটি যাত্রী প্রতীক্ষালয়ে ধাক্কা মেরেছিল। তার জেরে একের পর এক সিলিন্ডার ফাটতে থাকে। আগুন ছড়ায় পাশের একটি ডেকরেটরের দোকান এবং একটি নার্সিংহোমের একাংশে। ছয় রোগীকে নার্সিংহোমের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। দমকলের সাতটি ইঞ্জিন চার ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার জেরে মুম্বই রোডে বুধবার ভোর পর্যন্ত যানজটে নাজেহাল হন বহু মানুষ।
তবে, কেউ হতাহত হননি। পুলিশের অনুমান, চালক ঘুমিয়ে পড়ায় ওই দুর্ঘটনা। তবে তাঁর খোঁজ পায়নি পুলিশ। তাঁর সন্ধান চলছে এবং ট্রাকে কোনও খালাসি ছিল না বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত তখন সওয়া বারোটা। পর পর সিলিন্ডার ফাটার বিকট আওয়াজে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। বাইরে বেরিয়ে তাঁরা যে অগ্নিকাণ্ড দেখেন, তা কস্মিনকালেও দেখেননি বলে জানান এলাকাবাসীর অনেকেই। হলদিয়া থেকে বাণিজ্যিক ব্যবহারের শতাধিক গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে মুম্বই রোড ধরে কলকাতার দিকে যাচ্ছিল ট্রাকটি। রানিহাটি বাসস্টপে যাত্রী প্রতীক্ষালয়ে ট্রাকটি ধাক্কা মারে। সঙ্গে সঙ্গে ট্রাকে আগুন ধরে যায়। সিলিন্ডার ফাটতে শুরু করে। স্থানীয় বাসিন্দারা ভয়ে প্রথমে এলাকা থেকে পালান।
ঘটনাস্থলের পাশের নার্সিংহোম এবং ডেকরেটরের দোকানেও আগুন ছড়ায়। দোকানটিও ভস্মীভূত হয়। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা নার্সিংহোমে ভর্তি ছয় রোগীকে নার্সিংহোমেরই অন্যত্র সরিয়ে দেন। খবর দেওয়া হয় দমকলে। ঘটনাস্থলে পুলিশ ও র্যা ফ মোতায়েন করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দা শেখ বিদ্যুৎ বলেন, ‘‘সিলিন্ডার ফাটার শব্দে এলাকা কেঁপে উঠেছিল। তারপর দেখি, আগুনের শিখা। ট্রাকটির কাছে এগনোই যাচ্ছিল না। কেউই কিছু ভেবে উঠতে পারছিলেন না। এমন আগুন আগে দেখিনি।’’
স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, একটা সময় পর্যন্ত ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ কর্মসূচিতে পুলিশ নানা ভাবে সক্রিয় ছিল। রাতে যাতে গাড়ির চালকেরা ঘুমিয়ে না পড়েন, সে জন্য পুলিশ রাস্তায় মাঝে মাঝে দাঁড় করিয়ে তাঁদের চা ও চোখে-মুখে জল দেওয়ার ব্যবস্থা করত। কিন্তু বেশ কিছুদিন যাবৎ পুলিশের সেই তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না।হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (ট্র্যাফিক) অর্ণব বিশ্বাস বলেন, ‘‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ— কর্মসূচি সব সময় চলছে। দুর্ঘটনার সংখ্যা অনেক কমে গিয়েছে। গাড়ি থামিয়ে চালকদের জল ও চা দেওয়াটা সাধারণত শীতকালে হয়। যাতে তাড়াতাড়ি ঘুম কাটে। এ ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার কারণ জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’