ব্রেকে গোলযোগ, যাত্রীদের ভোগান্তি

কোন্নগরে প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে এগিয়ে থামল ট্রেন

ঘটনার জেরে ট্রেন চলাচল ব্যহত হয়। ওই ট্রেনের পিছনে আরও দু’টি লোকাল ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ে। কয়েকটি ট্রেন পাশের লাইন দিয়ে ধীরে ধীরে চা‌লানো হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোন্নগর শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:০৫
Share:

উদ্বেগ: ট্রেন থেকে নেমে দাঁড়িয়ে যাত্রীরা। নিজস্ব চিত্র

ট্রেন যখন থামল, তখন তিনটি কামরা প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে এগিয়ে গিয়েছে। পরিস্থিতির জন্য এক ঘণ্টারও বেশি সময় একাধিক ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ল। আর অফিস থেকে ফেরার ব্যস্ত সময়ে ভোগান্তিতে পড়লেন সাধারণ মানুষ। বৃহস্পতিবার রাতে কোন্নগর স্টেশনের ওই ঘটনায় ট্রেনের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন যাত্রীরা। অভিযোগ উড়িয়ে রেল সূত্রের দাবি, যান্ত্রিক সমস্যার কারণে ওই ঘটনা। তবে বিষয়টি অনুসন্ধান করে দেখা হচ্ছে।

Advertisement

রেল ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটে আপ তারকেশ্বর লোকাল হাওড়া স্টেশন থেকে ছাড়ে। ট্রেনটি কোন্নগরে ঢোকে রাত ৮টা ১০ মিনিট নাগাদ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ট্রেনটি দাঁড়ানোর কথা। কিন্তু সেটি যখন থামে, তখন তিনটি কামরা প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে এগিয়ে গিয়েছে। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় ওই তিনটি কামরা থেকে কেউ কেউ ঝাঁপ দিয়ে নিচে নামেন। আতঙ্ক ছড়ায়। জিআরপি এবং আরপিএফের কর্মীরা ঘটনাস্থলে আসেন। ওই তিনটি কামরা থেকে বাকি যাত্রীদের নামানো হয়। ঘটনার জেরে ট্রেন চলাচল ব্যহত হয়। ওই ট্রেনের পিছনে আরও দু’টি লোকাল ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ে। কয়েকটি ট্রেন পাশের লাইন দিয়ে ধীরে ধীরে চা‌লানো হয়। খবর পেয়ে রেলের ইঞ্জিনিয়াররা এসে মেরামতির কাজ শুরু করেন। মেরামতির পরে রাত পৌঁনে দশটা নাগাদ ট্রেনটি তারকেশ্বরের দিকে রওনা হয়। নিত্যযাত্রীদের সংগঠন ‘তারকেশ্বর লাইন প্যাসেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক হরদাস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমাদের ধারণা, ট্রেনের রক্ষণাবেক্ষণ ঠিকঠাক হচ্ছে না। গাফিলতির জন্যই এই ধরণের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।’’
কোন্নগর স্টেশনে ওই অংশে প্ল্যাটফর্মের সামনে দিয়ে বহু মানুষ রেল লাইন পেরিয়ে যাতায়াত করেন। স্থানীয় বাসিন্দা এবং যাত্রীদের একাংশের বক্তব্য, ট্রেনটি প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে বেরনোর সময়ে লাইন পারাপারের সময় বিপত্তি ঘটতে পারত।

পূর্ব রেলের মূখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী অবশ্য বলেন, ‘‘মনে হচ্ছে ওই ট্রেনের ব্রেকে হঠাৎ সমস্যা হওয়ায় ট্রেনটা নির্দিষ্ট জায়গার থেকে কিছুটা এগিয়ে যায়। একে ‘ব্রেক বাইন্ডিং’ বলে। এটা অস্বাভাবিক নয়। কারও গাফিলতিও নয়। তবে নিয়ম মেনে বিষয়টি অনুসন্ধান করে দেখা হচ্ছে, ঠিক কি কারণে ওই ঘটনা ঘটেছিল।’’ রাত সাড়ে ৯টার পরেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় বলে তাঁর দাবি।
ওই আধিকারিকের বক্তব্য, কোনও পরিস্থিতিতেই রেল লাইন টপকে যাতায়াত করা উচিত নয়। তিনি বলেন, ‘‘শুধু রেললাইন পেরনোই নয়, অনেক রেল লাইনে দাঁড়িয়ে নিজস্বী পর্যন্ত তো‌লেন। দু’টিই বিপজ্জনক প্রবণতা। আমরা এই ব্যাপারে সাধারণ মান‌ুষকে সচেতন করার চেষ্টা করি।’’ হরদাসবাবুও বলেন, ‘‘শুধুমাত্র সময় বাঁচাতে বহু মানুষ অযৌক্তিক ভাবে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে রেল লাইন টপকে যাতায়াত করেন। এটা বেআইনি। আমরাও এ ব্যাপারে মানুষকে সচেতন হওয়ার অনুরোধ করছি।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement