গাড়ির চালকদের হাতে গোলাপ তুলে দিচ্ছেন বন্ধ সমর্থক। নিজস্ব চিত্র।
একহাতে লাল পতাকা, অন্য হাতে লাল গোলাপ নিয়ে বন্ধে গাড়ি আকটাতে দেখা গেল সিপিএম কর্মীদের। বাম কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকা ভারত বন্ধ সফল করতে এমনই ছবি দেখা গিয়েছে হাওড়ায় দাশনগরের সানপুর মোড়ে। সেখানে বন্ধ সমর্থকরা গাড়ির চালকদের হাতে গোলাপ ফুল তুলে দিচ্ছেন। এক সিপিএম কর্মীর বক্তব্য, বন্ধে সাড়া না দিয়ে যাঁরা গাড়ি চালাচ্ছেন তাঁদের হাতে গোলাপ তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তবে জেলার অন্যান্য জায়গায় এই ছবি দেখা যায়নি। পথ অবরোধ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কুশপুতুল পোড়ানো হয় বিভিন্ন এলাকায়। হাওড়া শহরের পাশাপাশি অনেক গ্রামীণ এলাকাতেও বন্ধের সমর্থনে মিছিল করে বাম ও কংগ্রেস।
গোটা জেলায় বড় কোনও গোলমালের খবর পাওয়া যায়নি। দেখা গিয়েছে মিশ্র প্রভাব। রাস্তায় গাড়ি চললেও যাত্রী সংখ্যা ছিল খুবই কম। ট্রেন চললেও বিভিন্ন স্টেশনে অবরোধের জেরে ব্যাহত হয় রেল পরিষেবা। হাওড়া শাখার দক্ষিণ-পূর্ব রেলে ডোমজুড়, বীরশিবপুর, উলুবেড়িয়া, কুলগাছিয়া স্টেশনে অবরোধ হয়। রেল লাইনে ফেলে দেওয়া হয় গাছের গুঁড়ি। পূর্ব রেলের বেলানগর, লিলুয়া ও বালি স্টেশনেও অবরোধ চলে।
৬ নম্বর জাতীয় সড়কের সলপ মোড় এবং ২ নম্বর জাতীয় সড়কে বালি হল্টের কাছে কিছুক্ষণ অবরোধ হয়। পুলিশ অবরোধ সরিয়ে দেয়। উলুবেড়িয়ার গরুহাটা মোড়ে একটি লরির চাকার হাওয়া খুলে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বন্ধ সমর্থকদের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন জায়গায় দোকান, বাজার বন্ধ থাকলেও জেলার জুটমিলগুলিতে তেমন প্রভাব পড়েনি।
জেলায় বন্ধ কতটা সফল তা নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও চলছে। সিপিএম জেলা সম্পাদক বিপ্লব মজুমদার জানান, ধর্মঘট সফল। তিনি বলেন, “মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে সাড়া দিয়েছে। শহরে কিছু মানুষ কাজের জন্য বাইরে বার হয়েছিলেন কিন্তু গ্রামীণ হাওড়ায় বন্ধ পুরোপুরি সফল।” অন্য দিকে, বিজেপি যুব মোর্চার জেলা সভাপতি ওমপ্রকাশ সিংহর দাবি, বন্ধ একেবারেই সফল হয়নি। তাঁর বক্তব্য, “সব কিছুই স্বাভাবিক ছিল। লকডাউনে মানুষ এমনিতে কর্মহীন হয়ে পড়েছিলেন। রুটি রুজির টানে করোনা আবহের মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে বাইরে বার হচ্ছেন। আর এই পরিস্থিতিতে বন্ধ ডেকে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা আরও কমাল বাম ও কংগ্রেস।”
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির বিরুদ্ধে শিবপুর ট্রাম ডিপো থেকে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত একটি মিছিল করে তৃণমূল। নেতৃত্ব দেন রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়। তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি বিল ও আর্থিক নীতির বিরুদ্ধে তাঁদের আন্দোলন। বর্তমান পরিস্থিতিতে বন্ধ করা মানে সাধারণ মানুষকে বিপাকে ফেলা।”