গড়চুমুক পর্যটন কেন্দ্রের গেট ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। —নিজস্ব চিত্র।
পার্কের ভিতরে আগাছা ও বনজঙ্গলে ভর্তি। রয়েছে সাপের ভয়। তবু খুলে দেওয়া হল গড়চুমুক পর্যটন কেন্দ্র।
মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক ভাবে হাওড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাবেরী দাস ফিতে কেটে খুলে দিয়েছেন পর্যটন কেন্দ্র। উপস্থিত ছিলেন সহ সভাধিপতি অজয় ভট্টাচার্য, বন ও ভূমি দফতরের কর্মাধ্যক্ষ অন্তরা সাহা, শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ শ্রীধর মণ্ডল, বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ গোপা ঘোষ ও নারী-শিশুকল্যাণ বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ আম্বিয়া খাতুন।
লকডাউনে বন্ধ হয়েছিল গড়চুমুক পর্যটন কেন্দ্র। আনলক-পর্ব শুরু হয়েছে অনেক আগে। জেলা পরিষদের কর্তারা বলেছিলেন, বন-জঙ্গল পরিষ্কার করে সেটি খোলা হবে। কিন্তু মঙ্গলবার দেখা গেল অন্য ছবি। আমপানে পড়ে যাওয়া অনেক গাছ এখনও সেখান থেকে সরানো হয়নি। আগাছায় ভর্তি হয়ে গিয়েছে গোটা এলাকা। লতাপাতায় মুখ ঢেকেছে বসার জায়গা। আগাছায় ভরে গিয়েছে পানীয় জলের কলগুলির আশপাশের এলাকা। ঘাসের উচ্চতা কোথাও পাঁচ ফুট, কোথাও সাত ফুট। চারদিকে এখনও আমপানের তাণ্ডবের চিহ্ন স্পষ্ট। বনজঙ্গল বাড়ায় বেড়েছে সাপের উপদ্রব।
কেন এত তাড়াহুড়ো?
অজয় বলেন, ‘‘ প্রত্যেক বছর লক্ষ লক্ষ পর্যটক এখানে আসেন মনোরম পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী দেখতে। করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউন ঘোষণা হওয়ায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আমপানে তছনছ হয়ে যায় মিনি জু। ভেঙে পড়ে প্রায় চারশো ছোটবড় গাছ। গড়চুমুক পর্যটন কেন্দ্রের মিনি জু-এর ডিয়ার পার্কের তারের বেড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয় কয়েকটি জায়গায়। আগাছা জন্মায়। আমরা উৎসবের জন্য খুলে দিলাম। আগাছা ও বনজঙ্গল পরিষ্কারের কাজ চলছে। আবার পর্যটকেরা ভিড় করবেন।’’
গড়চুমুক পর্যটনকেন্দ্রের এক দিকে রয়েছে চড়ুইভাতির জায়গা। তবে পর্যটনকেন্দ্র খুললেও চড়ুইভাতির অনুমতি এখনই দেওয়া হবে না। অন্য দিকে মিনি জু ও ডিয়ার পার্ক। ছোটদের জন্য শিশু উদ্যান রয়েছে। প্রত্যেক বছর বহু মানুষ সেখানে বেড়াতে আসেন। ময়ূর, কচ্ছপ, কুমির থেকে শুরু করে নানা প্রজাতির পাখির দেখা মেলে। রয়েছে বন্যপ্রাণী। এখানকার অন্যতম আকর্ষণ কুমির ও হরিণ।
মঙ্গলবার পার্ক খুলে দেওয়ার পরে সেখানে ভিড় বেশ জমে ওঠে। পর্যটকদের অভিযোগ, পার্কের ভিতর এত বনজঙ্গল যে ঘুরতেই ভয় করছে। এক তরুণীর কথায়, ‘‘লকডাউনের জন্য দীর্ঘ কয়েক মাস ঘুরতে যেতে পারিনি। গড়চুমুক পর্যটন কেন্দ্র খোলা হচ্ছে শুনে এসেছি। কিন্তু এত বনজঙ্গলে ভর্তি যে, ঘুরতে ভয় পাচ্ছে। চারদিকে আগাছা ভর্তি।’’ তবে পর্যটন কেন্দ্র খোলায় মুখে হাসি ফুটেছে স্থানীয় দোকানদারদের।