—ফাইল চিত্র।
টোটোর পরিবর্তে ই-রিকশা বিক্রির জন্য সরকার অনুমোদিত কয়েকটি সংস্থাকে দায়িত্ব দিয়েছিল হাওড়া জেলা প্রশাসন। কিন্তু আদতে দেখা যাচ্ছে, পুলিশি নজরদারির অভাবে অজস্র ই-রিকশা বিক্রির সংস্থা গজিয়ে উঠায় এখন তারাই পড়েছে বিপাকে। কোনও কোনও সংস্থা বৈধ ট্রেড লাইসেন্স না থাকা সত্ত্বেও দোকান খুলে বসেছে। সব চেয়ে সমস্যার, টোটোমালিকেরা ওই সব শো-রুমে গিয়ে জেলা প্রশাসনের দেওয়া ই-রিকশার আবেদনপত্র জমা দিচ্ছেন। যার ফলে পুরো প্রক্রিয়াটাই ভেস্তে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন প্রশাসনিক কর্তারা।
টোটো বন্ধ করে হাওড়া শহরে যাতে ই-রিকশা চলে, সে জন্য মার্চ মাসের ২২ থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত ছ’হাজারের বেশি টোটোমালিককে আবেদনপত্র দেয় প্রশাসন ও পুলিশ। যে সব টোটোমালিকের হাওড়া পুরসভা বা হাওড়া সিটি পুলিশের বৈধ চিহ্নিতকরণ নম্বর আছে, তাঁদেরই আবেদনপত্র দেওয়া হয়। আরও জানিয়ে দেওয়া হয়, আবেদনপত্র জমা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই টোটোমালিকদের সরকার স্বীকৃত ডিলারের থেকে চুক্তিপত্রে সই করে নিতে হবে। প্রশাসনের তরফে আবেদনপত্র জমা দেওয়ার তারিখ ধার্য হয় ২ এপ্রিল থেকে ১০ এপ্রিল।
কিন্তু ঘটনাচক্রে দেখা যায়, ২ তারিখের ঠিক আগে নেতাজি সুভাষ রোড, হাওড়া-আমতা রোড, কদমতলা সহ বিভিন্ন এলাকায় ছোট ছোট দোকান করে ই-রিকশা বিক্রির অজস্র সংস্থা খোলা হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রথমে ১২টি সংস্থাকে ই-রিকশা বিক্রির স্বীকৃতি দেওয়া হলেও পরে তিনটি সংস্থাকে বিভিন্ন অভিযোগে বাতিল করে প্রশাসন। কিন্তু ২ এপ্রিল আবেদনপত্র জমা দেওয়ার কয়েক দিন আগে থেকে দেখা যায়, বাতিল হওয়া সংস্থাগুলি রীতিমতো শো-রুম খুলে টোটোমালিকদের আবেদনপত্র জমা নিয়ে তাঁদের দিয়ে চুক্তিপত্রে সই করিয়ে নিচ্ছে।
কিন্তু টোটোমালিকেরাই বা কেন বাতিল হওয়া সংস্থাগুলিতে গিয়ে আবেদনপত্র দিচ্ছেন? তাঁদের একাংশের অভিযোগ, ওই সব সংস্থাই তাঁদের ভুল বুঝিয়ে চুক্তিপত্রে সই করিয়ে নিচ্ছে।
হাওড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অভিজিৎ লাটুয়া বলেন, ‘‘এমন বেশ কিছু অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। আমরা পুলিশকে জানিয়েছি।’’ হাওড়ার পুলিশ কমিশনার দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহ বলেন, ‘‘যাঁরা এ সব করছেন, তাঁদের সঙ্গে যে টোটোমালিকেরা চুক্তি করছেন, তাঁদের আবেদনপত্র স্ক্রুটিনির সময়ে বাতিল বলে গণ্য করা হবে। এ রকম বেআইনি সংস্থা শো-রুম খুলে বসেছে বলে আমাদের কাছেও খবর আছে। পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে।’’