একই রিপোর্ট কার্ড পর পর দু’দিন উদ্বোধন করলেন আনিসুল ইসলাম ও অসিত চট্টোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র
জনসভা হোক বা সরকারের উন্নয়ন কাজের প্রচার— শাসকদল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিরাম নেই পান্ডুয়ায়।
এই ব্লকে তৃণমূল কার্যত আড়াআড়ি ভাগে বিভক্ত। দিনকয়েক আগে দলীয় জনসভায় বহু নেতাকেই দেখা যায়নি। এ বার ‘বঙ্গধ্বনি যাত্রা’ কর্মসূচির উদ্বোধন হল দু’বার।
বিধানসভা ভোটকে ‘পাখির চোখ’ করে রাজ্য সরকারের গত ১০ বছরের উন্নয়নের খতিয়ানের রিপোর্ট কার্ড জন-সাধারণের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কর্মসূচি নিয়েছে তৃণমূল। প্রতি ব্লকে ‘বঙ্গধ্বনি যাত্রা’ নামে ওই কর্মসূচি পালন করছে তারা। শুক্রবার বিকেলে পান্ডুয়ার কলবাজারে দলীয় কার্যালয় থেকে ওই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি আনিসুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সদস্য শিল্পা নন্দী, পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সঞ্জয় ঘোষ, সহ-সভাপতি সঞ্জিত বন্দ্যোপাধ্যায়, রহিম নবিরা। সরকারের উন্নয়ন প্রচারে পদযাত্রাও হয়। শনিবার দুপুরে নিয়ালায় বর্তমান ব্লক তৃণমূল সভাপতি অসিত চট্টোপাধ্যায় ফের ওই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। তার পাশে ছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী চম্পা হাজরা। তাঁরাও পদযাত্রা করেন।
দু’টি ক্ষেত্রেই এক পক্ষের নেতারা অন্য পক্ষের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না। একই রিপোর্ট কার্ডের দু’বার উদ্বোধন হওয়া নিয়ে যথারীতি শোরগোল পড়েছে শাসকদলের অন্দরে। দলের দু’পক্ষের নেতাদের লড়াই নিয়ে কর্মীদের অনেকেই কার্যত দিশাহীন। তাঁদের বক্তব্য, নেতাদের গোষ্ঠী-রাজনীতির জন্য বিরোধীরা সুবিধা পেয়ে যাচ্ছে। বিধানসভা ভোটে এর প্রভাব পড়তে পারে বলেও তাঁরা মনে করছেন।
সংশ্লিষ্ট নেতাদের মধ্যে অবশ্য বিশেষ হেলদোল নেই। সঞ্জিতের দাবি, ‘‘জেলা নেতৃত্বের নির্দেশে শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলন করে ‘বঙ্গধ্বনি যাত্রা’র কাজ শুরু করা হয়। পরের দিনের উদ্বোধনের বিষয়ে কিছু জানি না।’’ পক্ষান্তরে, অসিতের দাবি, জেলা নেতৃত্বের নির্দেশেই তিনি শনিবার ওই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। দলের অপর গোষ্ঠীর কর্মসূচি প্রসঙ্গে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘কে কোথায় কী করছেন, এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করব না।’’
দলের জেলা কোর কমিটির অন্যতম সদস্য তথা মুখপাত্র প্রবীর ঘোষাল দাবি করেন, ওই ব্লকে ‘বঙ্গধ্বনি যাত্রা’ কর্মসূচি দু’বার উদ্বোধনের বিষয়টি তিনি জানেন না। তবে, দু’বার উদ্বোধন করা ঠিক নয় বলে তিনি মনে করেন। প্রসঙ্গ এড়িয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘সরকারের উন্নয়নের কাজের খতিয়ান মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমাদের কাজ। সর্বত্রই তৃণমূল কর্মীরা সেই কাজ হৃদয় দিয়ে করছেন।’’
জেলা নেতারা যা-ই বলুন, পান্ডুয়ায় যুযুধান গোষ্ঠীর আকচা-আকচিতে দলের অন্দরে অস্বস্তি বাড়ছেই।