গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে চর্চা তৃণমূলে, ইস্তফাপত্র জমা দিলেন চুঁচুড়ার পুর-কাউন্সিলর

মহকুমাশাসক (চুঁচু়ড়া) অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, ‘‘চিঠি আমার দফতরে জমা পড়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইন মোতাবেক পদক্ষেপ করা হবে।’’ সুনীলের অভিযোগ আমল দিতে চাননি স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার এবং পুরপ্রধান গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:৪৭
Share:

প্রতীকী চিত্র

নির্বাচনের কয়েক মাস আগে প্রশাসনের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিলেন হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার এক তৃণমূল কাউন্সিলর। ইস্তফার চিঠিতে শহরের তিন নম্বর ওয়ার্ডের ওই কাউন্সিলর তথা জলকল বিভাগের পুর-পারিষদ সুনীল মালাকার জানিয়েছেন, শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি পদত্যাগ করছেন। এর পাশাপাশি তিনি দলের একাংশকেও এ জন্য দায়ী করেছেন।

Advertisement

মহকুমাশাসক (চুঁচু়ড়া) অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, ‘‘চিঠি আমার দফতরে জমা পড়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইন মোতাবেক পদক্ষেপ করা হবে।’’ সুনীলের অভিযোগ আমল দিতে চাননি স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার এবং পুরপ্রধান গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায়। তবে, গোটা বিষয়টি নিয়ে শাসক দলের শিবিরে চর্চা শুরু হয়েছে। সামনে আসছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথাও।

তৃণমূল সূত্রের খবর, ওই কাউন্সিলর বিধায়কের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতা বলে পরিচিত। বেশ কিছু দিন ধরে দলের স্থানীয় ‘ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী’র নেতাদের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বাড়ছিল। সম্প্রতি ওই ওয়ার্ডে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে যান বিধায়ক অসিতবাবু। তিনি জানান, ওই ওয়ার্ডের পরিষেবা নিয়ে মানুষ তাঁর কাছে অভিযোগ করেন। তিনি নিজেও এলাকায় ঘুরে অভিযোগের সারবত্তা বুঝতে পারেন। সুনীলবাবুর সমালোচনা করতে শোনা যায় তাঁকে। ওই দিনই পুরসভার তরফে সেখানকার সাফাই সুপারভাইজারকে সরিয়ে দেওয়া হয়। স্বভাবতই বিষয়টি নিয়ে সুনীলবাবু বিরক্ত হন।

Advertisement

শুক্রবার মহকুমাশাসককে পাঠানো চিঠিতে তিনি লিখেছেন, পুরসভার জল দফতরের পুর-পারিষদ তিনি। পুরসভার কোনও ওয়ার্ডে জলের সমস্যা নেই। উপরন্তু জলের চাপে কোথাও কোথাও পাইপ ফেটে যাচ্ছে। তাঁর ওয়ার্ড পুরসভার ত্রিশটির মধ্যে সবথেকে বড় ওয়ার্ড। কিন্তু সেই নিরিখে পর্যাপ্ত কর্মী নেই। ২০১০ সাল থেকে (সেই বার থেকেই তিনি কাউন্সিলর) তিনি কর্মী সংখ্যা বাড়ানোর কথা বললেও তা করা হয়নি। তাতেও তিনি যথাযথ পরিষেবা দিচ্ছেন ওয়ার্ডের মানুষকে।

তাঁর অভিযোগ, কিন্তু দলের কিছু নেতা এবং কর্মীর কাছে তাঁকে অপমানিত, অসম্মানিত এবং লাঞ্ছিত হতে হচ্ছে। যে পদে থেকে সম্মানের থেকে অসম্মানিত বেশি হতে হয়, সেই পথ থেকে সরে যাওয়া বাঞ্ছনীয়। এর পরে তিনি লিখেছেন, ৫৭ বছর বয়সে শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি পদত্যাগ করতে চান। চিঠির প্রতিলিপি জমা দেন পুর দফতরেও।

সংবাদমাধ্যমের কাছে সুনীলের অভিযোগ, দিন কয়েক আগে দলের নেতাদের একাংশের মদতে স্থানীয় কিছু লোক মিথ্যা অভিযোগে তাঁর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখায়। তবে কাউন্সিলর পদ থেকে ইস্তফা দিলেও দল ছাড়ছেন না বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, ‘‘মানুষের পাশে থেকেছি। কিন্তু দলেরই স্থানীয় নেতৃত্বের কাছে অপমানিত হতে হলে পদত্যাগ করা ছাড়া উপায় কী?’’

বিধায়ক অসিতবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘কেউ স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে চাইলে কিছু বলার নেই। তবে ওঁর বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর ক্ষোভ বেড়ে গিয়েছিল।’’ একই বক্তব্য পুরপ্রধানেরও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement