বেচারাম মান্নার বাড়িতে প্রবীর ঘোষাল। নিজস্ব চিত্র।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ইস্তফা দিলেও সন্ধের মধ্যেই তা প্রত্যাহারও করে নেন হরিপালের তৃণমূল বিধায়ক বেচারাম মান্না। এর পর শুক্রবারও বেচারামের মান ভাঙানোর চেষ্টা চালাল তৃণমূল। এ দিন সকালে সিঙ্গুরে বেচারামের বাড়িতে যান উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক তথা দলের হুগলি জেলা মুখপাত্র প্রবীর ঘোষাল। দুই বিধায়কের সাক্ষাৎ শেষে প্রবীর বলেন, "রাগ অভিমান হয়েছিল। সব মিটে গিয়েছে। বিধায়ক থাকছেন বেচারাম। দক্ষিনপন্থী দলে এটা হয়। দ্বন্দ্ব থাকে আবার নির্বাচনে সবাই এক হয়ে লড়াই করে।"
প্রসঙ্গত, সিঙ্গুরে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি পরিবর্তন নিয়ে গোলমালের সূত্রপাত। সিঙ্গুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের আর এক প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের অনুগামী হিসেবে পরিচিত মহাদেব দাসকে সরিয়ে সম্প্রতি বেচারামের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত গোবিন্দ ধাড়াকে সভাপতি পদে বসায় জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। তাতে বিদ্রোহী হয়ে ওঠেন রবীন্দ্রনাথ। দল ছাড়ার হুমকিও দিয়ে দেন। এর পরেই সিঙ্গুরের জনপ্রিয় ‘মাস্টারমশাই’-এর (রবীন্দ্রনাথ এই নামেই পরিচিত) ক্ষোভ সামলাতে হস্তক্ষেপ করেন খোদ দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার রাতে বেচারামের সঙ্গে মমতা ফোনে কথা বলেন বলে তৃণমূল সূত্রে জানা যায়। অবিলম্বে মহাদেব দাসকে ব্লক সভাপতি পদে ফেরানোর নির্দেশ দেওয়া হয় বলে বেচারামের ঘনিষ্ঠরা জানান। মমতার নির্দেশের পরও বেচারাম আপত্তি তোলার চেষ্টা করলে তাঁকে না কি সতর্ক করে বলা হয় যে, দলকে যেন বেচা ‘ব্ল্যাকমেল’ করার চেষ্টা না করেন। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকে হরিপালের টিকিট দেওয়া হবে না বলেও বার্তা দেওয়া হয় বলে খবর। এর পরেই বেচারাম ইস্তফার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। শুক্রবার সিঙ্গুর ও হরিপালে বেচা অনুগামীরা দল থেকে গণ-পদত্যাগ করবেন বলে স্থির হয়েছিল। সে পরিকল্পনাও বাতিল হয়ে গিয়েছে বেচা ধমক খাওয়ার পরেই।
আরও পড়ুন: এক ‘ধমকে’ ইস্তফা, আর এক ‘ধমকে’ প্রত্যাহার বেচারামের
বৃহস্পতিবার দুপুরে বেচারামের ইস্তফার খবর ছড়াতেই তৎপর হন তৃণমূল নেতৃত্ব| তৃণমূল ভবনে ডেকে বেচারামকে দলের রাজ্য সভাপতি তথা সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সী ‘ধমক’ দেন বলে খবর। এর পরেই ইস্তফার সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নেনে বেচারাম। শুক্রবার সিঙ্গুর ও হরিপালে বেচারামের অনুগামীরা দল থেকে গণ-পদত্যাগ করবেন বলে স্থির হয়েছিল। সে পরিকল্পনাও বাতিল হয়ে গিয়েছে।