অমান্য: বেআইনি পার্কিং। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে। ছবি: দীপঙ্কর দে
দুর্ঘটনায় শিল্পী কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্যের মর্মান্তিক মৃত্যু ফের উস্কে দিল দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের নিরাপত্তার প্রশ্ন।
বুধবার রাত পর্যন্ত ওই দুর্ঘটনা নিয়ে কোনও অভিযোগ দায়ের না হলেও পুলিশ নির্দিষ্ট ধারায় মামলা শুরু করেছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে ওই দুর্ঘটনার নেপথ্যে নিয়ম ভাঙার প্রবণতাকেই দায়ী করেছে পুলিশ এবং জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ।
কী সেই নিয়ম?
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই রাস্তা যে প্রযুক্তিতে তৈরি, তাতে সাধারণত সর্বোচ্চ ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার গতিবেগে গাড়ি চলতে পারে। কিন্তু গাড়ির চালকেরা অনেক সময়েই নিয়ম ভেঙে গতি বাড়িয়ে দুর্ঘটনা ডেকে আনেন।’’ জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার শিল্পীর গাড়িটি ১০০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে চলছিল।’’
‘টোল’ দিয়ে ওই রাস্তা ব্যবহার করেন গাড়ি-চালকেরা। কিন্তু কিছুতেই ওই সড়কে দুর্ঘটনা এড়ানো যাচ্ছে না। পর পর দুর্ঘটনায় মানুষের মনে আতঙ্ক বাড়ছে। এ ক্ষেত্রে মানুষদের সচেতনতাকেও দুষছে পুলিশ ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, বাড়তি গতি ছাড়াও ‘লেন’ ভাঙার প্রবণতাও দুর্ঘটনা ডেকে আনছে। সময় এবং জ্বালানি বাঁচাতে অনেক গাড়ি-চালক ঢুকে পড়েন উল্টো ‘লেন’-এ। মুহূর্তের ভুলে দুর্ঘটনা ঘটে যায়। এর সঙ্গে ইদানীং দুর্ঘটনার আর একটি প্রবণতার দিকেও ইঙ্গিত করেছে পুলিশ। পুলিশের মতে, নির্দিষ্ট দূরত্ব না পেরিয়ে কাছের ‘শার্প কাট’ (যে পথে গাড়ি ঘোরানো যায়) দিয়ে দ্রুত গাড়ি ঘোরাতে গিয়েও দুর্ঘটনা ঘটছে। এ ছাড়া, যে সব জায়গায় রাস্তার দু’ধারে গার্ডওয়াল থাকে না, সেখান দিয়ে মোটরবাইক বা ছোট গাড়ি ঢুকে পড়ে। তাতেও দুর্ঘটনা ঘটছে।
সমস্যা সমাধান নিয়ে পুলিশ, প্রশাসন এবং জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের মধ্যে বিস্তর চাপান-উতোর আছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের এক কর্তা বলেন, ‘‘দুর্ঘটনা এড়াতে রাস্তার দু’লেনের মাঝখান দিয়ে যাতে গাড়ি চলাচল করতে না পারে সেই জন্য আমরা চেষ্টা করি। কিন্তু আমাদের নানা ভাবে চাপ দেওয়া হয় স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে। ফলে, অবধারিত ভাবে ঘটে দুর্ঘটনা।’’
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মানুষ যাতে সচেতন হন সেই লক্ষ্যে আমরা প্রচার করছি। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নানা সময় বৈঠক হয়। নিজেদের ত্রুটি ঢাকতেই অবান্তর অভিযোগ করা হচ্ছে।’’