বুধবার আরামবাগ হাসপাতালে থ্যালাসেমিয়া রোগী। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
বছর তেরোর মেয়ে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত। মঙ্গলবার বাবা তাকে নিয়ে গিয়েছিলেন আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে। কিন্তু ব্লাডব্যাঙ্কে রক্ত না-থাকায় ফিরে যেতে হয়েছিল তাঁদের। কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না বাবা। ফোন করে বসেন ‘দিদিকে বলো’-তে। বুধবার রক্তের ব্যবস্থা হল।
এত সহজে মেয়ে উমার ‘ও পজ়িটিভ’ গ্রুপের রক্তের ব্যবস্থা হয়ে যাবে ভাবতে পারেননি খানাকুলের গোবিন্দপুর গ্রামের দিনমজুর শ্রীকান্ত দলুই। তিনি বলেন, ‘‘মেয়ের চার বছর বয়সে রোগটা ধরা পড়ে। গোড়ায় ১০ দিন অন্তর রক্ত দিতে হত। এখন ২০ দিন অন্তর চলছে। মঙ্গলবার হাসপাতাল থেকে বলা হয়েছিল, রক্ত নেই। রক্তদাতা আনতে হবে। কিন্তু কাউকে রাজি করাতে পারিনি। তাই দিদিকে বলো-তে ফোন করি। ম্যাজিকের মতো কাজ হল।’’
এ দিন জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আরামবাগ পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান রাজেশ চৌধুরীর ব্যবস্থাপনায় রক্তের ব্যবস্থা হয়। রাজেশ বলেন, “লকডাউন চলায় রক্তদান শিবিরগুলো নিয়মিত না হওয়াতেই এই সমস্যা। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে জেলা পরিষদে ফোন করা হয়। বলা হয়, মুখ্যমন্ত্রী দ্রুত বিষয়টির সমাধান চাইছেন।”
মহকুমা হাসপাতালে ব্লাডব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, মাঝে কয়েকদিন জোগান থাকলেও ফের রক্তসঙ্কট দেখা দিয়েছে। লকডাউনের জেরে বিভিন্ন ক্লাব এবং সংগঠনের রক্তদান শিবির বাতিল হয়েছে। ব্লাডব্যাঙ্কটির উপর মহকুমা হাসপাতাল এবং একই চত্বরে থাকা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীরা ছাড়াও মহকুমার প্রায় ৫০টি নার্সিংহোম নির্ভরশীল।
হাসপাতালের সুপার সিদ্ধার্থ দত্ত বলেন, “এখন পুলিশ এবং কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন থেকে কিছু কিছু রক্তের জোগান দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু চাহিদার তুলনায় তা অপ্রতুল।”
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)