ফাইল চিত্র।
কলকাতার মতো বিপর্যয় মোকাবিলার বাহিনী তৈরি করছে হাওড়া পুরসভা। এই বাহিনীকে সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করবে হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, ৩০ জনকে নিয়ে এই বাহিনী তৈরি হবে। প্রশিক্ষণের পাশাপাশি এঁদের কাছে আধুনিক যন্ত্রপাতিও থাকবে।
বছর দুই আগে হাওড়ার তেলকল ঘাটে গঙ্গায় স্নান করতে নেমে তলিয়ে গিয়েছিল দুই কিশোর। হাওড়া সিটি পুলিশের কোনও প্রশিক্ষিত ডুবুরি না থাকায় সে দিন কলকাতা পুলিশের শরণাপন্ন হতে হয়েছিল। কলকাতা থেকে ডুবুরি আসতেই প্রায় ঘণ্টা দুয়েক লেগে যায়। তাঁরা এসে কিছু ক্ষণের মধ্যেই দুই কিশোরের মৃতদেহ উদ্ধার করেছিল। সে দিনই প্রশ্ন উঠেছিল, কলকাতার মতো হাওড়ার বিপর্যয় মোকাবিলার বাহিনী নেই কেন?
এর পরেই হাওড়ায় বিপর্যয় মোকাবিলার বাহিনী নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু হয়। মেয়র রথীন চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ওই বাহিনী গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তিন-চার মাসের মধ্যে ওই বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হবে। মেয়র বলেন, ‘‘বর্তমানে পুরসভার বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরে ১২ জন রয়েছেন। আরও ১৮ জনকে নেওয়া হবে। এঁরা কলকাতা পুলিশ বা ব্যারাকপুর পুলিশের কাছে প্রশিক্ষণ নেবেন। আধুনিক যন্ত্রও কেনা হবে।’’
গঙ্গায় স্নান করতে নেমে, পুকুরে বা খোলা পাতকুয়ায় পড়ে ডুবে যাওয়া, বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে আটকে পড়ার অজস্র ঘটনাও ঘটে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে গাছ ভেঙে পড়লে তা কেটে সরাতে যে যন্ত্র লাগে তা-ও পুরসভার হাতে নেই।
মাস দু’য়েক আগে হাওড়ার পুলিশ কমিশনার দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহ মেয়রকে এই বাহিনী তৈরির প্রস্তাব দেন। সেই সঙ্গে কী কী যন্ত্রপাতি বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের হাতে থাকা দরকার তারও একটি তালিকা দেন। ওই তালিকায় রয়েছে ডুবুরিদের জন্য স্কুবা সেট, লাইফ জ্যাকেট, গ্যাস ও ধোঁয়ায় কাজ করার জন্য কার্বন কম্পোজিট সিলিন্ডার, ফাইবারের নৌকা ইত্যাদি। সব কিছু কিনতে মোট খরচ ধরা হয়েছে ৭৭ লক্ষ টাকা।
হাওড়া সিটি পুলিশের ওই প্রস্তাবে জানানো হয়েছে, ৩০ জনের বাহিনীকে ১০ জন করে তিনটি দলে ভাগ করা হবে। একটি দলকে ঝড়ে পড়ে যাওয়া গাছ কাটা এবং উঁচু গাছের ডাল ছাঁটার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। অন্য দলকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে ডুবুরি হিসেবে। বাকি ১০ জনের দলকে তৈরি করা হবে বাড়ি ভেঙে পড়লে উদ্ধারের কাজে।
হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘এই ৩০ জনের দলটি হাওড়া পুরসভা তৈরি করে দিলেও দলটি হাওড়া সিটি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। প্রশিক্ষণ এবং কাজের জন্য অন্য কমিশনারেটেও পাঠানো হবে। এ বাহিনীর জন্য হাওড়ার বিভিন্ন জায়গায় অফিস তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে।’’