ফেরিঘাটের বেহাল জেটি দ্রুত সারানোর আশ্বাস

জ্যাকেট কেচে ব্যবহারের নিদান মন্ত্রীর

ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে বর্তমানে ৫টি জেটি বন্ধ। এ ব্যাপারে যাত্রীদের অনুযোগ শুনে মন্ত্রী জানান, বিভিন্ন ফেরিঘাট নিয়ে পরিবহণ দফতরের নির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে। সেই মতো গুরুত্ব এবং যাত্রী সংখ্যার নিরিখে এগিয়ে থাকা ঘাটে প্রথমে জেটি সংস্কার করা হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৭ ০২:২৬
Share:

পরিদর্শন: ঘাটের হাল দেখছেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী নিজস্ব চিত্র

একে একে সমস্ত ফেরিঘাটের বেহাল জেটি সংস্কার করবে রাজ্য সরকার। শুক্রবার উত্তর ২৪ পরগনা এবং হুগলির বিভিন্ন ফেরিঘাট পরিদর্শন করে এমন কথাই জানালেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।

Advertisement

কয়েক মাস আগে হুগলির ভদ্রেশ্বরে তেলেনিপাড়া ফেরিঘাটে অস্থায়ী জেটি ভেঙে বেশ কয়েক জনের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় রাজ্য সরকার নড়েচড়ে বসে। বিভিন্ন জায়গায় ফেরি চলাচলের পরিকাঠামো ঢেলে সাজার কাজ শুরু হয়। সেই কাজের তদারকিতেই মন্ত্রী এ দিন কয়েকটি ফেরিঘাট ঘুরে দেখেন।

এ দিন শুভেন্দু জলপথে বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ ব্যারাকপুরের মনিরামপুর ঘাটে যান। ওই ঘাট থেকে শেওড়াফুলির মাঝে ভুটভুটি তুলে ভেসেল চালানোর নির্দেশ দেন তিনি। তেলেনিপাড়া-কাণ্ডের পরে ইছাপুরের নবাবগঞ্জ ফেরিঘাটে অস্থায়ী বাঁশের সাঁকো বন্ধ রয়েছে। উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভার তরফে মন্ত্রীকে সেখানে পাকা জেটি তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়। মন্ত্রী দফতরের অফিসারদের ওই জেটি তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে ব‌লেন।

Advertisement

মন্ত্রীকে জানানো হয়, মণিরামপুর ঘাটের পাশে রাস্তার উপরেই বাস দাঁড়ানোয় যানজট হয়, দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ে। সেখানে বাস টার্মিনাস তৈরির জন্য মন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হয়। এ জন্য প্রস্তাবিত জায়গাও এ দিন ঘুরে দেখেন শুভেন্দু। পরে তিনি বলেন, ‘‘পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে। যাত্রী প্রতীক্ষালয়, পানীয় জল, শৌচাগারের সুবিধা-সহ বাস টার্মিনাস ধীরে ধীরে তৈরি করা হবে।’’

ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে বর্তমানে ৫টি জেটি বন্ধ। এ ব্যাপারে যাত্রীদের অনুযোগ শুনে মন্ত্রী জানান, বিভিন্ন ফেরিঘাট নিয়ে পরিবহণ দফতরের নির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে। সেই মতো গুরুত্ব এবং যাত্রী সংখ্যার নিরিখে এগিয়ে থাকা ঘাটে প্রথমে জেটি সংস্কার করা হবে। ধীরে ধীরে বাকিগুলোও করা হবে।

মণিরামপুর থেকে মন্ত্রী পৌঁছন শ্রীরামপুরে যুগল আঢ্য ফেরিঘাট (স্থানীয়ভাবে এটি ধোবিঘাট নামে পরিচিত)। সঙ্গে ছিলেন পরিবহণ সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ দফতরের অন্য আধিকারিকরা। হাজির ছিলেন বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল, চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার পীযূষ পাণ্ডেও। ব্যারাকপুর ঘাটে জেটি সংস্কারের জন্য এক মাস এখানে পরিষেবা বন্ধ থাকার কথা। মন্ত্রীকে জানানো হয়, শ্রীরামপুর থেকে বহু স্কুল পড়ুয়া ব্যারাকপুরে যায়। কয়েক হাজার নিত্যযাত্রী পারাপার করেন। সংস্কার চলাকালীন শ্রীরামপুর থেকে মণিরামপুর পর্যন্ত ফেরি চলাচলের আর্জি জানানো হয়। আজ, শনিবার থেকেই মণিরামপুর পর্যন্ত ফেরি চালানোর ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত দেন শুভেন্দু।

হুগলির জেলাশাসক সঞ্জয় বনশলকে মন্ত্রী বলেন, লাইফ জ্যাকেটের মান নিয়ে অভিযোগ আসছে। নিজেই একটি লাইফ জ্যাকেট নিয়ে পরখ করেন। দফতরের অফিসাররা তাঁকে জানান, লাইফ জ্যাকেটের মান যথাযথই রয়েছে। তবে অন্যের গায়ের জিনিস পরবেন না, এই যুক্তিতে সব যাত্রী তা ব্যবহার করতে চান না। সমাধান হিসেবে লাইফ জ্যাকেট কেচে ফের ব্যবহারের উপায় বাতলে দেন শুভেন্দু।

শ্রীরামপুরের পুরপ্রধান অমিয় মুখোপাধ্যায়কে মন্ত্রী বলেন, ‘‘১৮ দিনের মধ্যে শ্রীরামপুর-ব্যারাকপুর ধোবিঘাটে ফেরি পারাপার চালু হবে। কংক্রিটের জেটি করতে সাত মাস লাগবে। আপনাকে আশ্বাস দিচ্ছি, সেটা হয়ে গেলেই ঝুঁকিপূর্ণ ভুটভুটি সরিয়ে ভেসেল চালানো হবে।’’

সংবাদমাধ্যমকে শুভেন্দু বলেন, ‘‘তেলেনিপাড়ার ঘটনার পরে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে জলপথে যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং স্বাচ্ছন্দ্যের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনেই কাজ হচ্ছে।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘ঘাটের ড্রপ গেট, লাইফ জ্যাকেট-সহ গোটা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখলাম। শ্রীরামপুরে ঘাটের পরিকাঠামো দেখে আমি সন্তুষ্ট।’’

গুপ্তিপাড়া ফেরিঘাটেও জেটি সংস্কারের কাজ ‘যথাসময়ে শেষ হবে’ বলে মন্ত্রী জানান। কোন্নগর ফেরিঘাট ঘুরে সন্তুষ্ট শুভেন্দু আশ্বাস দেন, এখানে পরিকাঠামোগত কিছু প্রয়োজন হলে রাজ্য সরকার তার ব্যবস্থা করবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement