প্রতীকী ছবি।
শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা মেটানোর জন্য সময় চেয়েও মিল বন্ধ করে দিলেন হাওড়া জুটমিল কর্তৃপক্ষ। সপ্তাহের প্রথম দিন, সোমবার সকালে কাজে যোগ দিতে এসে মিলের বন্ধ গেটে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’-এর নোটিস দেখলেন শ্রমিকেরা। ঘটনায় তীব্র অসন্তোষ ছড়িয়েছে শ্রমিকদের মধ্যে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে কাজে যোগ দিতে এসে কর্মীরা দেখেন, গেট বন্ধ। সেখানে ঝোলানো আছে কাজ বন্ধের নোটিস। এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পরেই মিলের গেটের সামনে ভিড় জমতে থাকে। গোলমালের আশঙ্কায় পুলিশ ও র্যাফ নামানো হয়। খবর পেয়ে মিলের গেটে ছুটে আসেন বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। শ্রমিকদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের বহু টাকা পাওনা রয়েছে মিল কর্তৃপক্ষের কাছে। বারবার টাকা মেটাতে বলা হলেও লাভ হয়নি। এমনকি, গত ৮ তারিখ বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও তা মেলেনি। উল্টে মিলটাই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ২০১৮ সালে শ্রমিক অসন্তোষের কারণ দেখিয়ে কাজ বন্ধের নোটিস ঝুলিয়ে মিল বন্ধ করে দিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। মিল বন্ধের খবর পেয়ে এ দিন ছুটে এসেছিলেন ওই কারখানার অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক রমজান আলি। তিনি জানান, ২০১৩ সাল থেকে প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা জমা না পড়ায় এখনও পর্যন্ত তিনি সেই টাকা পাননি। হাওড়া জেলা আইএনটিটিইউসি-র সভাপতি অরূপেশ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘গত ২২ নভেম্বর মিল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রম কমিশনারের একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে মিল কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য এক মাস সময় চান। কিন্তু তার আগেই পরিকল্পনা করে মিল বন্ধ করে দিলেন তাঁরা।’’ তিনি আরও জানান, গত কয়েক দিন ধরেই মিলে কাঁচা মাল আসছিল না।
হাওড়া জুটমিলের সিটু নেতা রবি দাস বলেন, ‘‘২২ তারিখের বৈঠকে আর্থিক সমস্যার কথা উল্লেখ করে মিল কর্তৃপক্ষ আগামী এক মাস সপ্তাহে সাত দিনের পরিবর্তে পাঁচ দিন মিল চালানোর কথা বলেন। সেই মতো চুক্তিও হয়। এর ঠিক দু’সপ্তাহ পরে কাঁচা পাট আসা বন্ধ হয়ে য়ায়। এর পরেই রবিবার কাজ বন্ধের নোটিস। এটা পূর্ব-পরিকল্পিত।’’ রবিবাবুর দাবি, শ্রমিকদের পিএফ, গ্র্যাচুইটি-সহ বহু পাওনাই বকেয়া রয়েছে। তাই অবিলম্বে মিল খোলার দাবিতে গেটে ধর্নায় বসেছেন তাঁরা।
ওই কারখানার মালিক সঞ্জয় মলকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। মেসেজেরও উত্তর দেননি।