প্রতীকী ছবি।
লকডাউন শিথিল পর্বের দ্বিতীয় দফায় সরকারি এবং বেসরকারি অফিস খুলে গিয়েছে। মানুষ কর্মস্থলে পৌঁছাতে মরিয়া। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে লোকাল ট্রেন বন্ধ। আর বেসরকারি বাস মঙ্গলবারও পর্যাপ্ত রাস্তায় নামল না। এই জোড়া ধাক্কায় হাওড়া ও হুগলি দুই জেলাতেই গণপরিবহণ ব্যবস্থা এ দিনও কার্যত বেসামাল। শ্রীরামপুর ও উত্তরপাড়া থেকে কলকাতাগামী লঞ্চও চালানো হয় রাজ্য সরকারের উদ্যোগে। সেই প্রচেষ্টাও প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য। ফলে মঙ্গলবারও রাস্তায় বেরনো মানুষের ভোগান্তি ছিল অব্যাহত।
হুগলিতে ৪৭টি বাস রুট রয়েছে। এখন ২৫টি রুটে বাস চলে। চুঁচুড়া থেকে বেসরকারি বাসরুট ২ নম্বরকে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত চালানো হচ্ছে পরিস্থিতি সামাল দিতে। শ্রীরামপুর থেকে কলকাতাগামী ২৮৫ রুটের বাসও চলে এ দিন। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় তা ছিল কম। চুঁচুড়ার বাসিন্দা সঞ্চিতা ধর ধর্মতলায় একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। তিনি বলেন,‘‘গত দু’দিন বাসে উঠতে না পেরে বাড়ি ফিরে গিয়েছি। আজ ভাবছি ২ নম্বর বাসে দক্ষিণেশ্বর যাব। জানি না ধর্মতলার বাস পাব কি না।’’
হুগলি জেলা বাস মালিক সংগঠনের সম্পাদক অজিত খান বলেন, ‘‘আমরা বেশি সংখ্যায় রুটের বাস চালাতে চাইছি। কিন্তু গ্রামাঞ্চলের বাসে একেবারেই যাত্রী হচ্ছে না। শহরাঞ্চলে তুলনায় যাত্রী মিলছে। সরকার আমাদের দাবি অনুযায়ী ভাড়া না বাড়ালে শুধু লোকসানে বাস চালাতে অনেকেরই অনীহা রয়েছে।’’
এই আবহে পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলাতেও সরকারি বাস এবং লঞ্চ চালানোর উপরে জোর দিচ্ছে রাজ্য সরকার। শ্রীরামপুর থেকে করুণাময়ী এবং এসপ্ল্যানেড রুটে বাস চালু করল দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় নিগম (এসবিএসটিসি)। শ্রীরামপুর বাস টার্মিনাস থেকে সেক্টর ফাইভ হয়ে করুণাময়ী যাওয়ার বাস ছাড়ে এ দিন।
মঙ্গলবার হাওড়ায় বেসরকারি বাস কিছু বেশি চললেও মানুষের ভোগান্তি ঠেকানো যায়নি। জাতীয় সড়কের ধারে বিভিন্ন বাস স্ট্যান্ডে বহু মানুষের ভিড় চোখে পড়েছে। বাস না পেয়ে অনেকেই বাধ্য হয়ে ম্যাটাডর বা ট্রাকে চড়েই অফিসের পথে রওনা দিয়েছেন। হাওড়ায় মোট ৫০ টি রুটে প্রায় ৫০০ বেসরকারি বাস চলে। সোমবার মাত্র দুটি রুটে ১০ টা বাস চলেছিল। মঙ্গলবার নতুন করে আরও কয়েকটা রুটের বাস রাস্তায় নামে। বাগনান-শ্যামবাজার রুটের দুটি বাস চলে। আমতা -ধর্মতলা রুটের দুটি বাস চলে।
কলকাতামুখী বহু বেসরকারি বাস এ দিনও রাস্তায় নামেনি। এক বাস মালিক বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন লক ডাউনে বাসের যন্ত্রাংশ বিকল। সেই সব মেরামত করতে সময় লাগছে। তাই বাস চালানো যাচ্ছে না।’’
দু জেলাতেই কলকাতাগামী বাসে গাদাগাদি ভিড়। দূরত্ববিধি পুরোপুরি শিকেয়। অনেকে ভিড় এড়াতে মোটরবাইকে চড়ে অফিসে গিয়েছেন।