ছাত্র-নিগ্রহে জড়িত কে, কাজিয়া দুই পুলিশে

অন্য দিকে মঙ্গলবার রাতে অমরনাথ যাদব নামে এক যুবকের থেকে ছাত্রটির মোবাইল উদ্ধার করার পরে রেলপুলিশ দাবি করে, গোলাবাড়ি থানার পুলিশ যাঁকে ধরেছে তিনি মূল অভিযুক্ত নন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৮ ০১:১১
Share:

হাওড়া স্টেশনে এক দৃষ্টিহীন ছাত্রকে মারধর করে ছিনতাইয়ের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত কে? এই প্রশ্ন ঘিরে দুই পুলিশের মধ্যে তরজা এখন তুঙ্গে।

Advertisement

দুই পুলিশ, অর্থাৎ হাওড়া সিটি পুলিশ ও হাওড়া রেল পুলিশ। ঘটনার তদন্তে নেমে হাওড়া সিটি পুলিশ এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে দাবি করেছিল, তিনিই মূল অভিযুক্ত। কারণ, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে তাঁকেই ওই দৃষ্টিহীন ছাত্রের হাত ধরে স্টেশন থেকে বেরোতে দেখা গিয়েছে।

অন্য দিকে মঙ্গলবার রাতে অমরনাথ যাদব নামে এক যুবকের থেকে ছাত্রটির মোবাইল উদ্ধার করার পরে রেলপুলিশ দাবি করে, গোলাবাড়ি থানার পুলিশ যাঁকে ধরেছে তিনি মূল অভিযুক্ত নন। বরং অমরনাথকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই মূল অভিযুক্তের খোঁজ পাওয়া যাবে। কারণ রেলপুলিশের দাবি, ধৃতকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গিয়েছে, এক ব্যক্তি তাঁকে ফোনটি ৫০০ টাকায় বিক্রি করেছিলেন।

Advertisement

হাওড়া জিআরপি থানার আইসি নরেন্দ্রনাথ দত্ত মঙ্গলবার বলেন, ‘‘গোলাবাড়ি থানা ভুল লোককে ধরেছে। মোবাইল-সহ আমরা যাঁকে গ্রেফতার করেছি, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই মূল অভিযুক্তকে চিহ্নিত করা যাবে।’’

গত ৩১ মার্চ হাওড়া স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমে এক দুষ্কৃতীর হাতে আক্রান্ত হন জীবন রক্ষিত নামে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই দৃষ্টিহীন ছাত্র। অভিযোগ, তাঁকে মারধর করে অজ্ঞান করার পরে হাত বেঁধে টাকা, মোবাইল-সহ বিভিন্ন পরীক্ষার শংসাপত্র ছিনতাই করা হয়। ঘটনার পরে রেলপুলিশের নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদে দু’দিন হাওড়া জিআরপির সামনে বিক্ষোভ দেখান বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। শেষে বাধ্য হয়ে অভিযোগ নেয় জিআরপি।

গত শনিবার গোলাবাড়ি থানার পুলিশ আরপিএফের সহযোগিতায় শিবদত্ত প্রসাদ নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। পুলিশ তখন দাবি করেছিল, ধৃত ব্যক্তি দোষ স্বীকার করেছেন। গোলাবাড়ি থানার তদন্তকারীরা এ-ও দাবি করেন, দৃষ্টিহীন ছাত্রটির হাত ধরে যেহেতু এক ব্যক্তি তাঁকে স্টেশনের বাইরে নিয়ে গিয়েছিলেন, তাই তাঁকে ডেকে পাঠিয়ে তাঁর হাতের স্পর্শে অপরাধীকেও শনাক্ত করা গিয়েছে।

গোলাবাড়ি থানার ওসি তথাগত পাণ্ডে মঙ্গলবার বলেন, ‘‘আমরা ক্যামেরার ফুটেজ দেখে শিবদত্তকে ধরেছি। জিআরপি যাঁকে ধরেছে, তিনি ছিনতাই হওয়া মোবাইলটি কিনেছিলেন।’’ অন্য দিকে জিআরপি-র দাবি, যে ব্যক্তিকে হাওড়া সিটি পুলিশ ধরেছে, তিনি হাওড়া স্টেশনের কুলি। ওই ছাত্রকে তিনি স্টেশন থেকে বার করে আবার ফিরে এসেছিলেন। সেই ছবি রয়েছে।

স্বভাবতই প্রশ্ন, তা হলে মূল অভিযুক্ত কি এখনও অধরা?

রেলপুলিশের দাবি, মূল অভিযুক্ত এখনও ধরা পড়েনি। মঙ্গলবার রাতে যাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁকে জেরা করেই অভিযুক্তের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement