তল্লাশি। তারকেশ্বর মন্দির চত্বরে। —নিজস্ব চিত্র।
শিবরাত্রি উপলক্ষে শুক্রবার বিকেল থেকেই ভক্তদের ঢল নেমেছিল তারকেশ্বর মন্দিরে। দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই শৈবতীর্থে এই দিনে শুধু অন্য জেলা নয়, রাজ্য থেকেও বহু মানুষ শিব দর্শন ও পুজো দিতে আসেন। সে জন্য নাশকতার আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে মন্দির চত্বরে আঁটোসাটো নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করেছে পুলিশ।
মন্দিরের প্রবেশপথে দু’টি গেটে ‘ডোর ফ্রেম’ মেটাল ডিটেক্টর বসানো হয়েছে। অন্য গেটগুলিতে মেটাল ডিটেক্টর হাতে উপস্থিত পুলিশকর্মীরা। মন্দিরে ঢোকার সময় কার্যত প্রত্যেকের ব্যাগ তল্লাশি করে দেখেছেন পুলিশকর্মীরা। মন্দির চত্বর জুড়ে রয়েছে সিসি টিভির নজরদারি।
জেলা পুলিশ সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, পুলিশের তরফে ১৬টি ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়েছে মন্দির চত্বরে। ২০ জন অফিসার-সহ বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। প্রচুর সংখ্যক মহিলা এই বিশেষ দিনে তারকেশ্বরে আসেন। তাঁদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে প্রচুর মহিলা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে পোশাকের পুলিশকর্মীরাও ভিড়ে মিশে থাকছেন। হুগলি জেলার পুলিশ আধিকারিকদের দাবি, পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্ছিদ্র করতে পুলিশের তরফে সব ব্যবস্থাই নেওয়া হয়েছে। কোনওরকম গোলমাল দেখলেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মন্দিরের নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক হতে পারে, এমন কোনও জিনিস নিয়ে যাতে কেউ মন্দির চত্বরে ঢুকতে না পারে সে দিকেও কড়া নজর রাখা হচ্ছে। শুক্রবার দুপুরে আইজি (পশ্চিমাঞ্চল) রাজীব মিশ্র, হুগলির পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন, এসডিপিও (চন্দননগর) রানা মুখোপাধ্যায়-সহ অন্য আধিকারিকেরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে মন্দির এলাকা পরিদর্শন করেন।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘মন্দির চত্বর ও তার আশপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সিসি টিভি, মেটাল ডিটেক্টর থাকছে। মন্দিরে ঢোকার আগে সবাইকে তল্লাশি করা হচ্ছে। সাদা পোশাকের পুলিশকর্মীরাও সর্বক্ষণ নজরদারি চালাচ্ছেন।’’ তারকেশ্বরের দণ্ডীস্বামী সুরেশ্বর আশ্রম মোহন্ত মহারাজ জানান, মন্দির চত্বরে পুণ্যার্থীদের যাতে অসুবিধা না হয়, সে জন্য প্রশাসনের পাশাপাশি মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তারকেশ্বরের পুরপ্রধান স্বপন সামন্ত জানান, পুণ্যার্থীদের সুবিধার্থে শুক্র ও শনিবার সারাদিন পুরসভার পক্ষ থেকে পানীয় জল সরবরাহ করা হবে। সেইসঙ্গে শহরে পর্যাপ্ত আলোর বন্দোবস্ত করা হয়েছে। রাস্তাঘাটও পরিষ্কার রাখার ব্যবস্থা হচ্ছে। মন্দির চত্বরে স্বাস্থ্য দফতর এবং পুরসভার তরফে মেডিক্যাল টিম থাকবে। স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশাপাশি সেখানে চিকিৎসকও থাকছেন।