গ্রামবাসীদের বোঝাচ্ছেন বনকর্তারা। — নিজস্ব চিত্র
বাগনানের চন্দ্রপুরে অবাধে বাদুড় মেরে ফেলার ঘটনা শুক্রবার আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত হতেই নড়েচড়ে বসেছে হাওড়া জেলা বন দফতর। এ দিনই বন দফতরের কর্তারা ওই এলাকা-সহ বাগনানের বিভিন্ন এলাকায় যান। বন্যপ্রাণী রক্ষায় জনসাধারণের সচেতনতা বাড়াতে এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথাও বলেন। কথা বলেন স্থানীয় পঞ্চায়েতের কর্তাদের সঙ্গেও। বন দফতরের কর্তারা জানান, তাঁরা উলুবেড়িয়া রেঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরবেন। সেখানকার লোকজনদের বন্যপ্রাণী রক্ষা সম্পর্কে সচেতন করা হবে। যাতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
জেলার বাগনান, উলুবেড়িয়া-সহ আশপাশের এলাকা জুড়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বাদুড়, নেউল-সহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী মেরে ফেলা হচ্ছে বলে সেখানকার মানুষের অভিযোগ। বিষয়টি জানতে পেরে এ দিন বাগনানের চন্দ্রপুর, শীতলপুর সহ বাগনান ১ ও ২ নম্বর ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় যান বন দফতরের কর্তারা। কার্যত এদিন ভোর থেকেই এলাকায় বন দফতরের টহলদারি শুরু হয়। পরে এলাকায় যান উলুবেড়িয়ার রেঞ্জ অফিসার উৎপল সরকার। দুপুর পর্যন্ত তাঁরা বন্যপ্রাণী রক্ষার প্রয়োজনীয় নিয়ে এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। বাইরে থেকে কেউ এসে যাতে এ ধরনের কাজ না করতে না পারে সে বিষয়ে গ্রামবাসীদের সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি তাঁরাও যাতে এমন কাজ না করেন সে ব্যাপারে বোঝানো হয়েছে। কোথাও এরকম খবর পেলে সঙ্গে সঙ্গে তা বন দফতরে জানাতে বলা হয়েছে।
উৎপলবাবু বলেন, ‘‘মানুষকে বোঝানো হয়েছে বাদুড়-সহ অন্য বন্যপ্রাণীদের সংরক্ষণ করা কেন জরুরি। এরা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। এদের মারা আইনত দণ্ডনীয়। লোকজন আমাদের সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।’’ বন দফতরের কর্তাদের সঙ্গে এদিন গ্রামে গ্রামে যান বাগনান-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য মলয় বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘‘বন দফতরের পাশাপাশি আমরাও পঞ্চায়েতের তরফে সচেতনতামূলক প্রচার চালাব। প্রয়োজনে শিবিরও করা হবে।’’
চন্দ্রপুরের বাসিন্দা রতন দাস, বাবুরাম নস্করের কথায়, ‘‘এলাকায় বাইরের লোকেরা বিভিন্ন সময় এসে বাদুড়, কাঠবিড়ালী, নেউল শিকার করে। কিন্তু এ সব বন্যপ্রাণিদের মারা যে আইনত অপরাধ তা জানা ছিল না। বন দফতরের কর্তারা সেটা আমাদের জানিয়েছেন। আমরাও তাঁদের সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা করব।’’
এ দিন সচেতনতা প্রচার চালানোর পাশাপাশি বন দফতর তাদের ফোন নম্বর (০৩৩-২৬৪১১৭৭২) এলাকার লোকেদের দেয়। কোনও কিছু দেখলে বা খবর পেলে ওই নম্বরে জানাতে বলা হয়েছে।