প্রতীকী ছবি
মোবাইলে রিচার্জ সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের নাম করে এক যুবকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সাফ করে দিল সাইবার-জালিয়াত। টাকা ফেরত পেতে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন সৌম্য নন্দী নামে শ্রীরামপুরের চাতরার বাসিন্দা ওই যুবক।
সৌম্য জানান, গত ১৮ জুলাই তিনি সংশ্লিষ্ট মোবাইল সংস্থার অ্যাপের মাধ্যমে তাঁর মোবাইল ফোনে ২৪৪৮ টাকা রিচার্জ করতে গিয়ে ভুল করে তা অন্য নম্বরে করে ফেলেন। ওই টাকা ফেরত পেতে সংস্থার কাস্টমার কেয়ারে ফোন এবং একাধিক বার ই-মেল করেন। তবে, লাভ হয়নি। তাঁর অভিযোগ, শনিবার বিকেলে তাঁর মোবাইলে একটি ফোন আসে। পুরুষকণ্ঠে বলা হয়, ই-মেলে পাঠানো সমস্যা সমাধানের জন্য ওই মোবাইল সংস্থা থেকে ফোন করা হয়েছে। সৌম্য যেন সমস্যা বিস্তারিত ভাবে বলেন। সৌম্য বিষয়টি জানালে তাঁকে বলা হয়, টাকা ফেরত পেতে একটি অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে। সেইমতো সৌম্য ওই অ্যাপ ডাউনলোড করে সেই সংক্রান্ত তথ্য ওই ব্যক্তিকে দিয়ে দেন। তার পরে ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে ১০ টাকা রিচার্জ করেন। এর পরেই ওই যুবক দেখেন, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ২৪,১০৭ টাকা কাটা হয়েছে। ফোনের অন্য প্রান্তের ব্যক্তি জানান, ভুল করে ওই টাকা কাটা হয়েছে। ফেরত দেওয়া হচ্ছে। গরমিল আঁচ করে সৌম্য অ্যাকাউন্টের অবশিষ্ট ৪৩ হাজার টাকা এক বান্ধবীর অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু, ওই ব্যক্তি জানান, অ্যাকাউন্টে আগের মতো টাকা না থাকলে কেটে নেওয়া টাকা ফেরত দেওয়া যাবে না।
তখন বন্ধুর কাছ থেকে নিজের অ্যাকাউন্টে ওই টাকা ফিরিয়ে নেন সৌম্য। লোকটি বলেন, টেকনিক্যাল বিষয়ের জন্য ফের ১০ টাকা রিচার্জ করতে হবে। সে কথা বিশ্বাস করে সৌম্য তিন বার ১০ টাকা করে রিচার্জ করেন। কিছুক্ষণ পরেই দেখেন, অ্যাকাউন্ট থেকে তিন বারে অবশিষ্ট ৪৩ হাজার টাকাও তুলে নেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে এক ঘণ্টার মধ্যে প্রায় ৬৮ হাজার টাকা গায়েব হয়ে যায়।
গোটা ঘটনা বিস্তারিত ভাবে জানিয়ে রবিবার শ্রীরামপুর থানায় অভিযোগ করেন ওই যুবক। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের সাইবার শাখাতেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত টাকা বা প্রতারকের হদিস অবশ্য মেলেনি। কমিশনারেট সূত্রের বক্তব্য, ওই যুবকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে যাতে টাকা ফেরত আসে, পদ্ধতি অনুযায়ী সেই চেষ্টা চলছে। মোবাইল সংস্থায় পাঠানো ই-মেলের কথা প্রতারক কী করে জানল, সেই প্রশ্ন তুলছেন সৌম্য। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি যে ই-মেল করেছি, সে কথা জানিয়ে ফোন করাতেই অবিশ্বাস করিনি।’’
মোবাইল সংস্থা থেকে ই-মেলের বিষয় বাইরে পৌঁছেছে, এমনটা অবশ্য মনে করছেন না সাইবার শাখার আধিকারিকরা। বরং এখানেই স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের সতর্ক থাকার বার্তা দিতে চাইছেন তাঁরা। তাঁদের ধারণা, স্মার্টফোনে ভাইরাস থাকলে ব্যক্তিগত তথ্য জালিয়াতের হাতে পৌঁছে যেতে পারে। তা ছাড়া, চোখ বন্ধ করে যে কোনও অ্যাপ ডাউনলোড করা উচিত নয়। নির্দিষ্ট অ্যাপ কতটা সুরক্ষিত তা জেনে তবেই তা ডাউনলোড করা যেতে পারে। অ্যাপের গোপন তথ্য কোনও পরিস্থিতিতে অন্যকে দেওয়া ঠিক নয়।