Pandua

জায়ান্ট স্ক্রিন নিয়ে চাপানউতোর পান্ডুয়ায়

পাঁচ লক্ষ টাকা খরচে বসানো হয়েছে সুদৃশ জায়ান্ট স্ক্রিন। যেখানে প্রতিমুহূর্তে ফুটে উঠছে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের খুটিনাটি।বিরোধীদের প্রশ্ন, যে ব্লকে এখনও সব গ্রামের রাস্তা সংস্কারের কাজ শেষ করা যায়নি, সেখানে কোন যুক্তিতে সরকারি অর্থ অপচয় করা হল।

Advertisement

সুশান্ত সরকার

পান্ডুয়া শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২০ ০২:৩৯
Share:

বিতর্ক: পাণ্ডুয়ার তেলিমোড়ে বসানো হয়েছে এই জায়ান্ট স্ক্রিন — নিজস্ব চিত্র।

তৃণমূলের বক্তব্য, ওটা ‘জরুরি পরিষেবা’র অঙ্গ। বিরোধীদের কটাক্ষ, বিধানসভা ভোটির দিকে তাকিয়ে সরকারি অর্থে ব-কলমে শাসকদলের প্রচার। পাণ্ডুয়ায় সদ্য বসানো ইলেকট্রনিক জায়ান্ট স্ক্রিন নিয়ে শাসক-বিরোধী চাপানউতর তুঙ্গে।

Advertisement

পাঁচ লক্ষ টাকা খরচে বসানো হয়েছে সুদৃশ জায়ান্ট স্ক্রিন । যেখানে প্রতিমুহূর্তে ফুটে উঠছে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের খুটিনাটি। তৃণমূল পরিচালিত পান্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির এই উদ্যোগকে ঘিরে দানা বেধেছে বিতর্ক। বিরোধীদের প্রশ্ন, যে ব্লকে এখনও সব গ্রামের রাস্তা সংস্কারের কাজ শেষ করা যায়নি, সেখানে কোন যুক্তিতে সরকারি অর্থ অপচয় করা হল। প্রশাসনের দাবি, সরকারের নানা সিদ্ধান্ত মানুষকে জানানো এবং তথ্য তুলে ধরার জন্য ওই জায়ান্ট স্ক্রিন বসানো হয়েছে। দুর্গাপুজোর আগে পান্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা ব্যয়ে পান্ডুয়ার তেলিপাড়া মোড়ে জায়ান্ট স্ক্রিন বসানো হয়। পান্ডুয়ার সিপিএম বিধায়ক আমজাদ হোসেনের অভিযোগ, ‘‘ব্লকের অনেক গ্রামে রাস্তা সংস্কার হয়নি। মানুষ কষ্ট করে চলাফেরা করেন। নেই বাসস্ট্যান্ড। বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে সরকারের বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য জায়ান্ট স্ক্রিন বসানো হয়েছে।’’ সঙ্গে জুড়ে দেন কটাক্ষ, ‘‘ওই স্ক্রিনে আমপানে ক্ষতিপূরণ পাওয়া ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ করে দেখাক প্রশাসন। তা হলে ব্লকের মানুষ বুঝতে পারবেন, কে কী ভাবে কত টাকা পেয়েছে। এটা করার সাহস নেই। কারণ তা হলে ব্লকের তৃণমুলের নেতাদের মুখোশ খুলে যাবে।’’প্রশাসনকে বিঁধতে ছাড়েনি বিজেপি-ও। পান্ডুয়া মণ্ডলের বিজেপি নেতা অশোক দত্তের কথায়, ‘‘এখনও ব্লকে পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। জায়ান্ট স্ক্রিন বসাতে যে টাকা খরচ হয়েছে, তা পঞ্চায়েত সমিতি উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় করা হলে মানুষের উপকার হত। তা না-করে ব-কলমে শাসকদলের প্রচারের জন্য এত টাকা খরচ করা হয়েছে।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘মানুষের টাকা নিয়ে শাসকদল ছিনিমিনি খেলছে। আমরা ব্লক অফিসে এ নিয়ে ক্ষোভের কথা জানাব।’’ কী বলছে শাসকদল এবং তাদের পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতি?

পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা ব্লক তৃণমূলনেত্রী চম্পা হাজরার দাবি, ‘‘সরকারের নির্দেশ মেনেই যা করার করেছি। অন্য ব্লকেও আছে জায়ান্ট স্ক্রিন। এতে যেমন সরকারি প্রকল্পের কথা ফুটে ওঠে, তেমনই করোনা নিয়ে সচেতনতা প্রচারও চলে। ডেঙ্গি প্রতিরোধে কী সর্তকতা অবলম্বন করা উচিত, তা-ও মানুষকে ওই জায়ান্ট স্ক্রিনের মাধ্যমে জানানো হচ্ছে।’’ পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূলের সঞ্জীব ঘোষের অভিযোগ, ‘‘বিরোধীদের কোনও কাজ নেই। তাই তারা এমন এক জরুরি পরিষেবা নিয়ে রাজনীতি করছে। এলাকার মানুষের সুবিধার জন্য জায়ান্ট স্ক্রিন বসানো হয়েছে। ব্লকের সব জরুরি ঘোষণা ওই স্ক্রিনের মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।’’ পান্ডুয়া ব্লক প্রশাসনের কর্তারা অবশ্য এই বিতর্কে জড়াতে নারাজ। ব্লকের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘পান্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে বসানো ওই বোর্ডটি ‘তথ্য সহায়িকা’ হিসাবে কাজ করবে। প্রশাসনের সব নির্দেশিকা ওই তথ্য সহায়িকায় থাকবে।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement