ধৃতকে শনিবার উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালতে তোলা হচ্ছে।
গত সোমবার ভোরে শ্যামপুরের রামেশ্বরপুরে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একটি ধানজমির পাশ থেকে এক বৃদ্ধের রক্তাক্ত দেহ মিলেছিল। মনোরঞ্জন প্রামাণিক নামে ওই বৃদ্ধকে খুনের অভিযোগে শুক্রবার রাতে তাঁর বড় ছেলে ষুধিষ্ঠিরকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, জেরায় ধৃত অপরাধের কথা কবুল করে জানিয়েছে, বাবা একটি জমি তার নামে কিনতে রাজি হননি। সেই রাগে সে দিন ভোরে সে গলায় কাটারির কোপ মেরে বাবাকে খুন করে। খুনে ব্যবহৃত কাটারিটি শনিবার বিকেল পর্যন্ত পুলিশ উদ্ধার করতে পারেনি। সেটির খোঁজ চলছে এবং খুনের ঘটনায় আরও কেউ যুক্ত কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ধৃতকে এ দিন উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাকে পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
মনোরঞ্জন একটি ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করতেন। ষুধিষ্ঠির অন্য একটি ভাটায় কাজ করত। সে বিবাহিত। বাড়িতেই আলাদা থাকত। ছোট ছেলে, এক মেয়ে এবং স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন মনোরঞ্জন। গত সোমবার ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ মনোরঞ্জন হেঁটে বাড়ি থেকে কাজে যাওয়ার জন্য বের হন। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই তাঁর খুন হওয়ার খবর জানাজানি হয়। তদন্তে নামে পুলিশ।
হাওড়া জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘নিহতের দুই ছেলেকে দীর্ঘক্ষণ জিঞ্জাসাবাদ করা হয়েছিল। যুধিষ্ঠিরের কথায় অসঙ্গতি দেখা দেওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।’’
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, জেরায় যুধিষ্ঠির জানিয়েছে, গত সোমবার বাবার কাজে বেরনোর আধ ঘণ্টা আগেই সে বেরিয়ে যায়। বাবার জন্য রাস্তার ধারে সে অপেক্ষা করতে থাকে। এ দিন আদালতে যাওয়ার পথে ষুধিষ্ঠির বলে, ‘‘ছোট থেকে রোজগারের সব টাকা বাবাকে দিতাম। কিন্তু আমি কিছু চাইলে বাবা দিত না। বাবা একটি জমির বায়না করেছিল। সেই টাকাও দিয়েছিলাম। পরে ফেরত নিই। কিন্তু বাবা জমিটা ভাই, বোন এবং মায়ের নামে কিনবে বলেছিল। আমার নামে কিনতে রাজি হয়নি। বাড়িতে অশান্তি হচ্ছিল। সোমবার আর রাগ ধরে রাখতে পারিনি।’’