অপেক্ষা: মুম্বই রোডের ধারে উলুবেড়িয়ার নিমদিঘি বাসস্ট্যান্ডে যাত্রীদের লাইন। ছবি: সুব্রত জানা
ভাড়া বাড়ানোর দাবি থেকে তাঁরা সরছেন না। কেউ কেউ সরকারি ভর্তুকিরও দাবি তুলেছেন। এই অবস্থায় আজ, বুধবার থেকে হুগলির কলকাতাগামী কিছু রুটে বেসরকারি বাস পরিষেবা চালু হচ্ছে। কিন্ত ক’দিন এই পরিষেবা মিলবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। কারণ, জেলার বাস-মালিকেরা জানিয়ে দিয়েছেন, ভাড়া বাড়ানো না-হলে ক’দিন পর থেকে তাঁরা আর বাস নামাবেন না।
হুগলিতে মোট ৪৭টি রুটের বাস চলে। তার মধ্যে মঙ্গলবার মাত্র দু’টি (তারকেশ্বর-উদয়নারায়ণপুর এবং তারকেশ্বর-আরামবাগ)রুটের বাস চলেছে। এ দিকে, অনেক অফিস-কাছারি, দোকানপাট খুলে গিয়েছে। কিন্তু কর্মস্থলে যেতে গিয়ে বাসের অভাবে বহু যাত্রী পথে বেরিয়ে নাকাল হয়েছেন। যাত্রী-দুর্ভোগ কমাতেই এ দিন জেলার সব বাস-মালিক সংগঠনের কর্তাদের নিয়ে চুঁচুড়ায় একটি প্রশাসনিক বৈঠক হয়। সেখানেই তাঁরা নিজেদের দাবি ও শর্তের কথা জানান। বাস-চালক ও তাঁর সহকারীদের মাস্ক এবং স্যানিটাইজ়ার দেওয়ার দাবিও জানানো হয়।
জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ অধিকর্তা (আরটিও) সোমনাথ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বৈঠকে ঠিক হয়েছে বুধবার থেকে জেলা থেকে কলকাতাগামী রুটের বাসগুলি চলবে। দিন দু’য়েক পর থেকে অন্য রুটের বাস চালানো নিয়েও কথা হয়েছে। ভাড়াবৃদ্ধি সংক্রান্ত দাবি আমরা রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠিয়ে দিয়েছি।’’
জেলা বাস-মালিক সংগঠনের সম্পাদক অজিত খান বলেন, ‘‘বুধবার থেকে অল্প কিছু কলকাতাগামী বাস চালু করা হবে। তবে ভাড়া না-বাড়ালে আমরা ভবিষ্যতে বাস চালাব না। হুগলি থেকে মোট সাতটি রুটের কলকাতাগামী বাস রয়েছে। আরামবাগ এবং শ্রীরামপুর থেকে অফিসের সময়ে দু’টি করে বাস চালু করা হবে।’’ সরকারি ভর্তুকির দাবি তুলে জেলা দূরপাল্লার বাস মালিক সংগঠনের সম্পাদক গৌতম ধোলে বলেন, ‘‘ভর্তুকির বিষয়টা নিয়ে বিবেচনার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। বুধবার থেকে কিছু রুটে বাস চালানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।”
লকডাউন পর্বে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেসরকারি বাস পরিষেবা চালুর কথা ঘোষণা করার সময়েই বাস-মালিকেরা ভাড়াবৃদ্ধির দাবি তুলেছিলেন। রাজ্য সরকার সেই দাবি মানেনি। প্রথমে বাসে ২০ জন যাত্রী তোলার কথা বললেও সরকার পরে মত বদল করে জানায়, আসনের সমান যাত্রী নেওয়া যাবে বাসে। এরপরেও ভাড়াবৃদ্ধির দাবি উঠছে। সোমবার থেকে বেসরকারি বাস পুরোদস্তুর রাস্তায় নামার কথা থাকলেও হুগলিতে নামেনি। শ্রীরামপুর মহকুমা বাস সংগঠনের সম্পাদক রঞ্জন প্রামাণিক জানান, তাঁরা সরকারের কাছে চার কিলোমিটার পর্যন্ত ন্যূনতম ভাড়া ১০ টাকা করার দাবি জানিয়েছেন। তার উপর কিলোমিটারপ্রতি এক টাকা করে। না হলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে, এই দাবিও করেন তিনি।
জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাস ছাড়ে আরামবাগ থেকে। সেখানকার যাত্রীদের অবস্থা শোচনীয়। সেখানে কলকাতাগামী সরকারি বাসও ঠিকমতো মিলছে না বলে অভিযোগ।