অপেক্ষা: গোঘাটের ভিকদাস এলাকায় সবে শুরু হয়েছে ‘কর্মতীর্থ’ প্রকল্পের কাজ। ছবি: মোহন দাস
আগামী মাসের গোড়ায় জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক করতে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে সরকারি প্রকল্পগুলির কাজ দ্রুত গতিতে রূপায়ণে জোর দিয়েছে জেলা প্রশাসন। কিন্তু ‘কর্মতীর্থ’ প্রকল্পে সেই জোর কোথায়? এত দিনে সাতটি মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরি হয়েছে ঠিকই। কিন্তু কবে চালু হবে, কেউ জানেন না!
রাজ্যে কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৪ সালের জুলাইতে প্রতি ব্লকে অন্তত একটি করে ‘কর্মতীর্থ’ নামে মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরির কথা ঘোষণা করেছিলেন। বলা হয়েছিল— স্বনির্ভর গোষ্ঠী, গ্রামীণ কারিগর এবং ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক ব্যবসায়ীরা নিজেদের উৎপাদিত পণ্য ওই মার্কেট কমপ্লেক্স থেকে বিক্রি করতে পারবেন। সরকারি উদ্যোগে তাঁদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে। তিনটি দফতরের (সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও স্বনিযুক্তি) পৃথক ভাবে প্রকল্পটি রূপায়ণ করার কথা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, হুগলির ১৮টি ব্লকে মোট ১৯টি ‘কর্মতীর্থ’ গড়ার ছাড়পত্র মিলেছে। এর মধ্যে সংখ্যালঘু বিষয়ক এবং মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের ৯টি গড়ার কথা। পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের দায়িত্বে রয়েছে ৬টি এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও স্বনিযুক্তি দফতরের অধীনে ৪টি। মিলেছে বরাদ্দও। এর মধ্যে স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং স্বনিযুক্তি দফতরের প্রকল্পগুলিতেই বরাদ্দ সবচেয়ে বেশি। সাড়ে তিন কোটি থেকে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকার। বাকিগুলি ২ কোটি থেকে আড়াই কোটি টাকার মধ্যে। এর মধ্যে সংখ্যালঘু বিষয়ক এবং মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের চারটি (আরামবাগের আরান্ডি, ধনেখালি, বলাগড়, বাঁশবেড়িয়া) কর্মতীর্থ প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। বাকিগুলির নির্মাণ প্রক্রিয়া চলছে।
দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত তথা অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি) পূর্ণেন্দু মাজি জানিয়েছেন, যে চারটি কর্মতীর্থের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে, সেগুলিতে শীঘ্রই পরিচালন সমিতি গঠন করে ঘর বিলির প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।
বাকি দু’টি বিভাগের কী হাল?
স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও স্বনিযুক্তি দফতর এখনও কাজই শুরু করতে পারেনি। আর পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর এতদিনে দু’টির নির্মাণকাজ শেষ করছে। কিন্তু তা চালু করতে পারেনি। স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও স্বনিযুক্তি দফতরের কাজ নিয়ে অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) শ্রাবণী ধর বলেন, “এগুলি পূর্ত দফতর করবে। টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।” আর পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর যে দু’টির কাজ শেষ করেছে, তা চালু করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “দফতরের গাইড লাইন আসেনি। যে রকম ভাবে দফতর নির্দেশ দেবে সে ভাবেই কাজ হবে।”
আরান্ডির কর্মতীর্থ প্রকল্পটির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে মাসখানেক আগে। দু’টি তলায় ২৪টি করে ঘর। কিন্তু এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ হয়নি। আরান্ডি-১ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শ্রীকান্ত ঘোষ বলেন, “প্রকল্পটি কারা পরিচালনা করবে সেই সিদ্ধান্ত হয়নি। ফলে, উপভোক্তা নির্বাচনও করা যায়নি। আমরা নিজেরা আগাম প্রচার চালালেও ঘর নেওয়ার উদ্যোগী মিলছে না।”