কোথায় ফেলেছে, দেখিয়ে দিল বিশাল
Severed Head

ভদ্রেশ্বরে নয়ানজুলি থেকে উদ্ধার হল বিষ্ণুর কাটা মুণ্ড

তদন্তে নেমে প্রথমে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বৈদ্যবাটী খাল থেকে বিষ্ণুর কাটা হাত-পা এবং শেওড়াফুলির একটি পুকুর পাড় থেকে ধড় উদ্ধার হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২০ ০২:০৩
Share:

দিল্লি রোডের ধারে নয়ানজুলিতে তল্লাশি চলছে। — নিজস্ব চিত্র

খুন হওয়ার ঠিক এক মাস পরে উদ্ধার হল চুঁচুড়ার রায়বেড়ের নিহত যুবক বিষ্ণু মালের কাটা মুণ্ড। ওই খুনে মূল অভিযুক্ত সমাজবিরোধী বিশাল দাসকে নিয়ে তল্লাশি চালিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভদ্রেশ্বরের বিঘাটিতে দিল্লি রোডের ধারে নয়ানজুলি থেকে বিষ্ণুর মুণ্ডটি উদ্ধার হয়।চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘নিহতের দেহের বাকি অংশ আগেই উদ্ধার করা হয়েছে। মুণ্ডটি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তে পাঠানো হবে।’’

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, বিষ্ণুকে খুন করে বিশাল দক্ষিণ ২৪ পরগনায় গা-ঢাকা দিয়েছিল। দিন কয়েক আগে ওই জেলার জীবনতলায় গ্রামবাসীদের হাতে দুই শাগরেদ-সহ সে ধরা পরে। সোমবার তাদের চুঁচুড়ায় নিয়ে আসে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের আধিকারিকরা। চুঁচুড়া আদালত তাদের ১৪ দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয়। জেরায় বিশাল জানায়, বিষ্ণুর কাটা মুণ্ড প্লাস্টিকে মুড়ে ব্যাগে ভরা অবস্থায় বৈদ্যবাটী লাগোয়া জায়গায় দিল্লি রোডের ধারে নয়ানজুলিতে ফেলেছে। সোমবার রাতে বিশালকে সঙ্গে নিয়ে দিল্লি রোডের ধারের বিভিন্ন অংশে পুলিশ তল্লাশি চালায়। মঙ্গলবার সকাল থেকেও ফের তল্লাশি চলে। শেষে এ দিন সন্ধ্যায় বিঘাটিতে ধোবাপুকুর এলাকায় নয়ানজুলি থেকে মুণ্ডটি মেলে।

কমিশনারেটের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এক মাস জলের মধ্যে থেকে মুণ্ডটি পচে গিয়েছে। সেটি দেখে চেনার উপায় নেই। করোটির ছবি তুলে সুপার ইম্পোজ় করে সেটি কার, তা চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হবে। উদ্ধার হওয়া দেহাংশের সঙ্গে বিষ্ণুর আত্মীয়দের ডিএনএ পরীক্ষাও করা হচ্ছে।’’

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, বিশাল এক তরুণীকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু তরুণীর পরিবার তা মানেনি। পরে বিষ্ণুর সঙ্গে মেয়েটির সম্পর্ক হয়। তাতেই বিষ্ণুর উপরে বিশালের আক্রোশ জন্মায়। এক মাস আগে অর্থাৎ গত ১০ অক্টোবর বিষ্ণু বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন। বিশাল এবং তার দলবল সেখান থেকে তাঁকে মোটরবাইকে চাপিয়ে চাঁপদানির এক দুষ্কৃতীর বাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। সেখানে বিষ্ণুকে খুন করে চপার দিয়ে দেহ টুকরো টুকরো করে কাটা হয়। দেহাংশ বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দেওয়া হয়।

সন্ধ্যায় উদ্ধার হল একটি কাটা মুণ্ড।
— নিজস্ব চিত্র

তদন্তে নেমে প্রথমে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বৈদ্যবাটী খাল থেকে বিষ্ণুর কাটা হাত-পা এবং শেওড়াফুলির একটি পুকুর পাড় থেকে ধড় উদ্ধার হয়। পুলিশের দাবি, ১১ অক্টোবর ভোরের দিকে বিষ্ণুর মুণ্ড ব্যাগে ভরে সাইকেলের হ্যান্ডেলে ঝুলিয়ে বৈদ্যবাটী চৌমাথায় আসে মান্তু ঘোষ নামে এক শাগরেদের সঙ্গে। মান্তুকে সেখানে দাঁড় করিয়ে সাইকেল নিয়ে দিল্লি রোডের দিকে চলে যায়। সেখানেই মুণ্ডটি ফেলে আসে।কমিশনারেট সূত্রের খবর, নৃশংস ভাবে এক জনকে খুনের পরেও বিশালের মধ্যে কোনও অনুশোচনা নেই। যথেষ্ট সাবলীল ভাবেই পুলিশ আধিকারিকদের কথার জবাব দিয়েছে সে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement