প্রতীকী চিত্র
বহুবার বিভিন্ন দফতরে জানিয়েও বেহাল রাস্তার উন্নতি না-হওয়ায় ক্ষোভ জমেছিল গ্রামবাসীর। ‘দিদিকে বলো’-তে ফোন করতেই হাতে গরম ফল মিলল।
আমতা থানা থেকে রসপুরের সাধুখাঁ পাড়া পর্যন্ত দামোদরের বাঁধের উপরে প্রায় ৬ কিলোমিটার বেহাল রাস্তাটির সংস্কার কাজ শুরু করে দিয়েছে সেচ দফতর। এই দফতর সূত্রের খবর, পিচের ভাঙাচোরা পুরনো আস্তরণ তুলে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। তার উপরে নতুন করে পিচ ঢেলে ঝাঁ চকচকে রাস্তা করা হচ্ছে।
রাস্তাটি সংস্কারের দাবি নিয়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর ‘দিদিকে বলো’-তে ফোন করেছিলেন অত্রিক দাস নামে রসপুরের এক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র। তিনি বলেন, ‘‘আমি ফোন করার কয়েক ঘণ্টা পরেই মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে ফোন করে আমার কাছ থেকে রাস্তার বিস্তারিত বিবরণ নেওয়া হয়। কয়েক দিন পরে ফের আমাকে ফোন করে বলা হয়, শীঘ্রই রাস্তা সংস্কার করে দেওয়া হবে। দিন পনেরো হল রাস্তার কাজ শুরু হয়েছে। গত রবিবারেও মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে আমার কাছে ফোন করে জানতে চাওয়া হয়, কাজটি ঠিকমতো হচ্ছে কিনা। কাজটি হচ্ছে বলে আমি জানিয়ে দিয়েছি।’’
ওই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। ট্রেকার, টোটো, মোটরবাইক, অটো রিকশা চলে। কিন্তু এতদিন বেহাল রাস্তার জন্য সবাই অসুবিধায় পড়ছিলেন। রাস্তাটি ২০০৩ সালে তৈরি করে সেচ দফতর। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের অভাবে রাস্তাটির হাল ক্রমশ খারাপ হতে থাকে। ২০১৩ সালে কিছুটা সংস্কার হয়। কিন্তু ফের অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়ে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বহুবার তাঁরা রাস্তা সংস্কারের জন্য সেচ দফতরের কাছে আবেদন জানান। কিন্তু কাজ হয়নি।
অত্রিক বলেন, ‘‘মানুষের অসুবিধা দেখে শেষ পর্যন্ত আমি ‘দিদিকে বলো’-তে ফোন করি। তারপরেই সেচ দফতরের তৎপরতা শুরু হয়।’’ রসপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান জয়ন্ত পোল্যে বলেন, ‘‘আমরাও বহুবার সেচ দফতরের কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম। কিন্তু কাজটি হল ‘দিদিকে বলো’-তে ফোন করার পরে। যাই হোক, আমরা খুশি।’’
তবে, সেচ দফতরের পক্ষ থেকে এই রাস্তাটি যারা করছে, সেই নিম্ন দামোদর নির্মাণভুক্তি (২)-এর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ‘দিদিকে বলো’-তে ফোন যাওয়ার আগেই রাস্তা সংস্কারের জন্য টেন্ডার হয়ে গিয়েছিল। ঠিকা সংস্থাকে ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ও অনেক আগেই দেওয়া হয়ে গিয়েছিল। এ কথা শুনে অত্রিকের প্রশ্ন, ‘‘তা হলে কাজটি এতদিন শুরু হয়নি কেন?’’
আমতা-১ ব্লক প্রশাসনের কর্তারা জানান, এটা ঠিক, সেচ দফতর টেন্ডার করে ফেলেছিল এবং ঠিকা সংস্থাকে ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ও দিয়েছিল। তারপরেও কাজ শুরু হয়নি। ‘দিদিকে বলো’-তে ফোন যাওয়ার পরে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে তাঁদের কাছে চিঠি আসে বিষয়টি নিয়ে সেচ দফতরের সঙ্গে কথা বলার জন্য। তারপরেই সেচ দফতর কাজ শুরু করে। ব্লক প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘দিদিকে বলো-তে ফোন যাওয়ায় কাজটি যে দ্রুত শুরু হয়েছে, সেটা মানতে হবে।’’